কালীগঞ্জে পাগলা কুকুরের কামড়ে এক দিনে ২৮ জন হাসপাতালে
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন সড়কে পাগলা কুকুরের কামড় খেয়ে এক দিনে অন্তত ২৮ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কারও বুকে, কারও হাতে, আবার কারও ঘাড়ে কামড় দেয় কুকুর। জলাতঙ্ক রোধে টিকা নিয়েছেন তাঁরা। পাগলা কুকুরকে আটক করতে শহরে তল্লাশি চালাচ্ছেন পৌরসভার কর্মীরা।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে সকাল সাড়ে ১০টায় কুকুরে কামড় দেওয়া তিন রোগী হাসপাতালে আসেন। এরপর সন্ধ্যায় একে একে রোগী আসতে থাকেন। রাত আটটা পর্যন্ত কুকুরের কামড়ের শিকার ২৮ রোগী চিকিৎসা নেন। সবাই শহর ও শহরতলির বাসিন্দা। শহরের নতুন বাজার, জনতা ব্যাংক মোড়, কাশিপুর মোড় এলাকার পথচারীদের ওপর কুকুর বেশি আক্রমণ চালিয়েছে।
হাসপাতালের রেজিস্টার খাতায় দেখা গেছে, চাপালী গ্রামের বাসিন্দা দীপ্ত টেলিভিশনের সাংবাদিক শাহরিয়ার আলম (৩২), কালীগঞ্জ পৌরসভা এলাকার ঈশ্বরবা গ্রামের গোলাম মোস্তফা (৪০), কলেজপাড়ার সজল (২৮), সিদ্দিকুর রহমান (৪৮), মাহবুবুর রহমান (৩৪), কাশিপুর গ্রামের মিন্টু (২৪), ইদ্রিস আলী (৫০), রোহান (২৬), জাহাঙ্গীর আলম (৪৮), সাইফুল ইসলাম (৪২), জাহিদুল ইসলাম (৪৫), নদীপাড়ার শেখ আসিকুর রহমান (৩৬), ডাবলুর রহমান (৪২), কালুখালীর মশিয়ার রহমান (৫৫), আড়পাড়া এলাকার হাসেম আলী (১৯), বনানীপাড়ার মাহাবুব (২৮), শোয়াইবনগরের হাসান আলী (৩০), রিয়াজ (২১), মফিজুর রহমান (১৪), সাহাপাড়ার সামছুল ইসলাম (২৮), খড়াশুনী গ্রামের সোহাগ আলী (২৫) দাদপুরের সুফল দাস (৩২), পাঁচ-কাউনিয়া গ্রামের আবদুল্লাহ (৬০), সানবান্ধা গ্রামের আব্দুল লতিফ (৫০), নওদাগা গ্রামের রিয়াদ (২০), তামিম (১৮) ও নরেন্দ্রপুর গ্রামের আজাদ রহমান (২৬) কুকুড়ের কামড়ের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আরেকজন চিকিৎসা নিলেও তাঁর নাম জানা যায়নি।
দুটি কুকুর মিলে সবাইকে কামড়েছে বলে জানা গেছে। কুকুর দুটিকে ধরার চেষ্টা চলছে।
কাশিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। বাফার গুদামের সামনে থেকে একটি কুকুর লাফ দিয়ে তাঁর বাঁ হাতে কামড় দেয়। এ সময় কুকুর এমনভাবে তাঁকে ধরেছিল, তিনি ভীত হয়ে পড়েন।
আরেক আহত জাহিদুল ইসলাম বলেন, নতুন বাজার এলাকায় একটি কুকুর তাঁর কাঁধে কামড় দেয়। তিনি হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত সাইফুল ইসলাম বলেন, কুকুর তাঁর হাতে কামড় দিয়েছে। তিনি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কুকুরটি ছুটে তাঁর দিকে আসে। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই কামড় দেয়।
কালীগঞ্জ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তানভীর আলম বলেন, একসঙ্গে এত মানুষকে কুকুরে কামড় দিয়েছে যে তাঁরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেয়েছেন। তিনি জানান, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ১৪টি টিকা সংগ্রহ করে তাঁদের দিয়েছেন। অনেকে টিকা নিজেরা সংগ্রহ করছেন।
পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম বলেন, হঠাৎই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দু-একটি পাগলা কুকুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর মানুষকে কামড়ে দিচ্ছে। তিনি খবর পেয়ে হাসপাতালে যান, টিকার ব্যবস্থা করেন। পৌরসভার কর্মীরা রাতেই পাগলা কুকুরের অনুসন্ধানে নেমেছিলেন। দুটি কুকুর মিলে সবাইকে কামড়েছে বলে জানা গেছে। কুকুর দুটিকে ধরার চেষ্টা চলছে।