সিলেটে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলা, আহত ১০

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এগোতে থাকলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কয়েকজন মানবঢাল তৈরি করেন। মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায়
ছবি: আনিস মাহমুদ

সিলেটে কোটা আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছেন ছাত্রলীগের সশস্ত্র নেতা-কর্মীরা। আজ বিকেল চারটার দিকে সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।

এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সিলেট মহানগর শাখার সহসভাপতি সুমিত কান্তি দাস পিনাক (২৮) এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল সিলেট নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক তানজিনা বেগম (২৬)। এ ছাড়া আরও ৭-৮ জন বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন।

আরও পড়ুন
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। এতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হন। মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায়
ছবি: আনিস মাহমুদ

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থায় নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। বিকেল চারটার দিকে তাঁরা চৌহাট্টা এলাকা ত্যাগ করে জিন্দাবাজার হয়ে বন্দরবাজারের দিকে মিছিল নিয়ে যান। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি কিশওয়ার জাহান, সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন। এ ছাড়া যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতারাও মিছিলে ছিলেন। এ সময় অনেকের হাতে রামদা, চাকু, বাঁশের লাঠি, লোহার পাইপ, রড, স্টাম্প, কাঠের লাঠি দেখা গেছে। 

আরও পড়ুন
সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগকর্মীদের হাতে দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়। মঙ্গলবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে
ছবি: আনিস মাহমুদ

বন্দরবাজার এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দেখতে পেয়ে এগিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীসহ অন্যরা মানবঢাল তৈরি করেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ সময় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। এতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে অন্যরা সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়।

পরে বন্দরবাজার এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে খণ্ড খণ্ডভাবে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বন্দরবাজার এলাকা ত্যাগ করেন।

আরও পড়ুন
কোটা আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে সিলেটে দেশীয় অস্ত্র হাতে মিছিল করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে
ছবি: আনিস মাহমুদ

এর আগে বেলা তিনটা থেকে চৌহাট্টা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন। তাঁদের সঙ্গে সিলেটের জেলা ও মহানগর যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ দলীয় অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরাও বিক্ষোভে অংশ নেন।

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা, একাত্তরের ঘৃণিত গণহত্যাকারী রাজাকারদের পক্ষে সাফাই গাওয়া ও আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা তৈরির প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন