চট্টগ্রামে মাদ্রাসায় ভর্তির ১০ দিন না পেরোতেই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আরছা আক্তার নামের ১১ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বলছে, শৌচাগারে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে ওই ছাত্রী। তবে পরিবারের অভিযোগ, আরছা আক্তারকে মাদ্রাসার শিক্ষকেরা নির্যাতন করে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদ্রাসার পাঁচ শিক্ষককে হেফাজতে নিয়েছেন পুলিশ।
মারা যাওয়া আরছা আক্তার উপজেলার চরতী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চরতীর আলিচাঁন পাড়া এলাকার জিয়াবুল হোসেনের মেয়ে।
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১০-১২ দিন আগে আরছা আক্তারকে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের ফুলতলার আল কোরআন তাহফিজুল মডেল মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের বালিকা শাখায় ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে মাদ্রাসার শিক্ষকেরা ওই ছাত্রীকে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এ সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক ওই ছাত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ ওই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর আজ বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
সাতকানিয়া থানার উপপরিদর্শক উৎপল চক্রবর্তী মঙ্গলবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আরছা আক্তারের লাশটি উদ্ধার করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সেখানে উপস্থিত মাদ্রাসার শিক্ষকেরা দাবি করেন, ওই ছাত্রী মাদ্রাসার বাথরুমে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আরছা আক্তারের নানি লাইলা বেগম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার নাতিটিকে নির্যাতনের মাধ্যমে শিক্ষকেরা হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমি আমার নাতি হত্যার বিচার চাই।’
সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস ও সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রিটন সরকার বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই ছাত্রীর গলা ও কপালে দাগ দেখা গেছে। তবে ঘটনাটি নির্যাতন করে হত্যা না আত্মহত্যা; ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদ্রাসার দুজন নারী শিক্ষকসহ পাঁচ শিক্ষককে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।