কেন আর ‘এত বড় ষাঁড়’ পালবেন না ‘কালা তুফানের’ মালিক
এবার কোরবানির পশুর বাজারে আলোচিত নাটোরের ‘কালা তুফান’ বিক্রি হয়েছে ১০ লাখ টাকায়। ষাঁড়টি ২৫ লাখ টাকায় বিক্রির আশা করেছিলেন মালিক আমিরুল ইসলাম। লালন-পালনের খরচ বহন করা কষ্টসাধ্য হওয়ায় তিনি অন্তত ৫ লাখ টাকা লোকসানে ষাঁড়টি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করলেন। তাঁর এখন একটাই কথা, ‘এত বড় ষাঁড় আর পালব না।’
নাটোর সদর উপজেলার হয়বতপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম প্রায় চার বছর আগে ছয় মাস বয়সী একটি ষাঁড় ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকায় কিনে লালন-পালন শুরু করেন। হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি দেখতে কুচকুচে কালো। এ জন্য তার নাম রাখা হয় ‘কালা তুফান’। ২০২১ সালের ঈদে ষাঁড়টির ওজন প্রায় ২৩ মণ হলে তিনি বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় তিনি ষাঁড়টি বিক্রি করতে পারেননি।
গত বছরও ঈদে ষাঁড়টি বিক্রির ঘোষণা দেন আমিরুল। এক বছরে ষাঁড়ের ওজন বাড়ে। বেড়ে যায় লালন-পালনের খরচ। তবে দাম কম বলায় গত বছরও তিনি ষাঁড়টি বিক্রি করেননি। কিন্তু ষাঁড়টি লালন-পালনে খরচ অনেক বেশি হওয়ায় এবার তিনি অনেকটা বাধ্য হয়ে ষাঁড়টি বিক্রি করে দেন। ষাঁড়টির পেছনে প্রতিদিন খরচ হতো ১ হাজার ৩০০ টাকা।
ঈদের দুই দিন আগে সিলেটের এক ব্যবসায়ী ষাঁড়টি কোরবানির জন্য কিনতে রাজি হন। তিনি ষাঁড়টির দাম ১০ লাখ টাকা বলেন। আর এত বড় ষাঁড় পালনের জন্য তিনি ষাঁড়টির মালিককে দেড় লাখ টাকা বকশিশ দেওয়ার ঘোষণা দেন। এর বেশি দাম না ওঠায় আমিরুল ইসলাম ষাঁড়টি নিজের বাড়ি থেকে সিলেটের ওই ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন।
আমিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বড় ষাঁড়ের ক্রেতা কম। সবাই দেখতে আসেন। কিন্তু ন্যায্য দাম দিতে চান না। অথচ প্রতিদিন ষাঁড়টির পেছনে খরচ হচ্ছিল ১ হাজার ৩০০ টাকা। বাধ্য হয়ে আমি পাঁচ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে ষাঁড়টি বিক্রি করে দিয়েছি। বিক্রি না করলে ষাঁড়টি পালন করা আমার জন্য মুশকিল হয়ে পড়েছিল। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এত বড় ষাঁড় আর পালব না।’