মাদারীপুরে ব্যবসায়ী নেতাকে কুপিয়ে জখম
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক ব্যবসায়ী নেতাকে কুপিয়ে জখম ও ডান পায়ের রগ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সমিতিরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ব্যবসায়ী নেতাকে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়েছে।
গুরুতর আহত ব্যবসায়ী নেতার নাম আবুল কাশেম তালুকদার (৬৮)। তিনি কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের মোহরদ্দিরচর এলাকার সোনাবালী তালুকদারের ছেলে ও সমিতিরহাট বাজার কমিটির সভাপতি।
স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো আজ সকালে বাড়ি থেকে সমিতিরহাট বাজারে ব্যবসায়িক কাজে যান আবুল কাশেম তালুকদার। কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে কাশেমের গতি রোধ করেন কয়েকজন যুবক। পরে তাঁকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয় এবং তাঁর ডান পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। এ সময় আবুল কাশেমের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যান হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় আবুল কাশেমকে উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোমসাদি ইসলাম বলেন, আবুল কাশেমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর ডান পায়ের রগেও গুরুতর আঘাত রয়েছে। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া পায়ের রগ কাটার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
আবুল কাশেমের ছেলে মো. তাইজুল ইসলাম পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তিনি বলেন, ‘পূর্বশত্রুতা ছাড়াও হামলাকারীদের সঙ্গে আধিপত্য নিয়ে আমাদের বিরোধ রয়েছে। আমার বাবাকে অতর্কিতভাবে কুপিয়ে জখম ও পায়ের রগ কর্তন করেছে রাসেল খা, ফয়সাল তালুকদার, সোহেল মৃধা, হাচেন হাওলাদার ও আজিজুলসহ অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন লোক। তারা সবাই মিলে আমার বাবাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমার বাবাকে হত্যা করতে পারলে ওরা বাজার দখল করতে পারবে। আমার বাবার অবস্থা ভালো ন। তাঁকে পঙ্গুতে ভর্তি করা হয়েছে। যারা আমার বাবার ওপর হামলা চালিয়েছে, আমি তাদের বিচার চাই।’
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাসেল খা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি হামলার বিষয় কিছুই জানি না। এ ঘটনার সঙ্গে আমি বা আমার কোনো লোকজনও জড়িত নয়। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার আবদুল্লাহ আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, আধিপত্য ও পূর্বশত্রুতার জেরে এক ব্যবসায়ী নেতাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা এখনো সম্ভব হয়নি। হামলাকারীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।