কারাগারে হাজতিকে নির্যাতন, ২ কারারক্ষীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার
ফাইল ছবি

গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে এক হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে দুই মেট্রন বা হাবিলদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মহিলা কারাগারের সুপার মো. ওবায়দুর রহমান তাঁদের নোটিশ দেন। অন্যদিকে ভুক্তভোগী হাজতিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। মুক্তির পর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নোটিশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন মহিলা কারাগারের মেট্রন বা হাবিলদার ফাতেমা আক্তার ও সাম্মি আক্তার। নির্যাতনের শিকার নারী গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার বাসিন্দা। তিনি ঢাকার কোতোয়ালি থানার ৭৩৫ নম্বর মামলার আসামি। ১৬ জুন থেকে তিনি কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।

আরও পড়ুন

হাজতির ভাই আবদুল করিম গত রোববার গাজীপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নুর ওরফে পাপিয়ার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়।

লিখিত অভিযোগে আবদুল করিম বলেন, গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তিনি তাঁর বোনের সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে গিয়েছিলেন। নাম-ঠিকানা নেওয়ার তিন ঘণ্টা পর সাক্ষাতের টিকিট কাউন্টার থেকে জানানো হয়, ‘ডিও’ নেই, দেখা করা যাবে না। জামিনে বের হয়ে আসা লোকদের কাছে বোনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তাঁরা জানান, তাঁর বোনকে পিটিয়ে মারাত্মক আহতাবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে।

কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে বন্দী ওই নারী ঢাকা জজকোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী ছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় নথি গায়েব করার মামলায় গ্রেপ্তার হলে তাঁকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। আজ সকালে তাঁর জামিন মঞ্জুর হলে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তি দেওয়ার পর তাঁর স্বজনেরা তাঁকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারী সাংবাদিকদের কাছে নির্যাতনের বর্ণনা দেন। কারাগারে বন্দী অবস্থায় বহিষ্কৃত যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামীমা নুর ওরফে পাপিয়া ও কারাগারের মেট্রন ফাতেমা তাঁকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের (ভারপ্রাপ্ত) জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় ঢাকা থেকে ও তাঁর পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া জামিনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ওই বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।