একাত্তরে যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা এখন আরও বেশি সংগঠিত: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

আজ সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক
ছবি: প্রথম আলো

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, একাত্তরে যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা এখন আরও বেশি সংগঠিত। বর্তমান সরকারকে বিব্রত ও মহান স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তারা অব্যাহতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আজ সোমবার সকালে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর আম্রকাননে মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, শেখ হাসিনার সরকার এসব অপশক্তি দমন করে রেখেছে। তবে দেশি-বিদেশি প্ররোচনায় তারা প্রায় সময়ই দেশের স্বাভাবিক অবস্থা বিপন্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাই সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

রাজাকারদের তালিকা প্রকাশের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এখন রাজাকারদের নামের তালিকা তৈরি করা হবে। আইন সংশোধনের মাধ্যমে সে কাজ করার পথ খুলে গেছে।

মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন। আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এরপর শেখ হাসিনা মঞ্চের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মন্ত্রী। এ সময় পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যদের গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগরের আমবাগানে বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল। এ আমবাগানের নাম তখন পর্যন্ত ছিল ‘বৈদ্যনাথতলা’। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে নয়টার দিকে একটি সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান হয় সেখানে। নতুন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা প্রকাশ্যে শপথ গ্রহণ করেন। অধ্যাপক ইউসুফ আলী আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। বাংলাদেশ সরকার পরবর্তী সময়ে ‘মুজিবনগর সরকার বা প্রবাসী সরকার’ নামেও পরিচিতি পায়।

১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি করা হয়। আর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তাজউদ্দীন আহমদ।