১৮ জুলাইয়ের পর আমি হাসতে ভুলে গেছি: মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেছেন, ‘সবাই বলত আমার আর মুগ্ধের হাসি নাকি খুব সুন্দর। কিন্তু ১৮ জুলাইয়ের পর আমি হাসতে ভুলে গেছি। আমি এখন আর হাসতে পারি না। আমি এখন আর ঘুমাতে পারি না। প্রতিমুহূর্তে আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের মৃত্যু আমাকে তাড়া করে বেড়ায়।’
আজ শনিবার দুপুরে কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভা মিলনায়তনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সুরক্ষা সিটি’ নামে লাকসামের একটি প্রতিষ্ঠান এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় বারবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
স্নিগ্ধ বলেন, ‘যার চলে যায় সেই বোঝে হারানোর যন্ত্রণা কতটা নির্মম ও কষ্টের। তবে আমরা সব কষ্ট ভুলে যাব, যদি একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে পারি। আন্দোলনে যোগ দেওয়া আমার ভাই-বোনদের একটি মাত্র উদ্দেশ্য ছিল সেটি হলো—শোষণ, অন্যায় অত্যাচার ও দুর্নীতিমুক্ত একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার। তাঁদের সেই স্বপ্ন পূরণে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ নিয়ে মুগ্ধের ভাই বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের সহযোগিতা করার জন্য জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন নামে এই সংগঠন করা হয়েছে। আপনারা সবাই মিলে সহযোগিতা করলে এটি প্রসারিত হবে। আমরা নিহতদের পরিবার ও আহতদের খোঁজখবর রাখছি। স্বৈরাচার সরকারের হাত থেকে দেশ স্বাধীন হয়েছে। তবে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না এই স্বাধীনতার ইতিহাস। অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা আমাদের রক্ষা করতে হবে। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে সংস্কার করতে হবে। সেই জন্য আমাদের এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারকে আরও বেশি করে সহযোগিতা করতে হবে।’
সুরক্ষা সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুজ্জামান ভুট্টোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সমন্বয়ক সাদিক আল আরমান, সংগীতশিল্পী মশিউর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নাজিয়া বিনতে আলম, জামায়াতে ইসলামীর কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি সৈয়দ সরওয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, লাকসাম পৌরসভার আমির মু. জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারী, সেক্রেটারি মু. শহীদ উল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।