রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান অভিযোগ করেছেন, অনেক কেন্দ্রে ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ভোটাররা বিড়ম্বনায় পড়েছেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও ভোট দিতে না পেরে অনেকে ফিরে গেছেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে মৌখিকভাবে এসব অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন উপস্থিত ছিলেন না। ফলে তাঁর স্টাফ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে অভিযোগ করেন মোস্তাফিজার রহমান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন প্রথম আলোকে বলেন, কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট দিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এই সিস্টেম (ইভিএম) বয়স্ক ভোটারদের বুঝতে অসুবিধা হওয়ায় এমনটি হয়েছে।
ওই কার্যালয় থেকে বের হয়ে জাপার প্রার্থী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম, ইভিএমে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান করতে পারবেন ভোটাররা। কিন্তু সকালে যখন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলাম তখন জানতে পারলাম, ইভিএমে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিলে আসছে না। নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা বলছেন, কিছুটা সমস্যা হওয়ার কারণে দীর্ঘ সারি হয়েছে। কোনো কেন্দ্রে আটটি বুথ আছে, সেখানে দুটি বুথে সমস্যা।’
সকালবেলা নিজ কেন্দ্রে ইভিএমের ত্রুটির কারণে বিড়ম্বনায় পড়েছেন উল্লেখ করে মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রে বয়স্ক নারী ও পুরুষ ভোটাররা সারিতে অপেক্ষা করতে করতে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। এতে ভোট কম পড়বে। তবে অভিযোগ করার সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের স্টাফ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন আমাকে বলেছেন, কেন্দ্রে ভোটার থাকলে তাঁরা নাকি রাত ১০টা পর্যন্ত ভোট নেবেন।’
২০১৭ সালের সিটি নির্বাচনের কথা প্রসঙ্গ টেনে জাপার প্রার্থী বলেন, ‘ওই সময়ে বেলা ৩টার মধ্যে ৭০-৭৫ শতাংশ ভোট দেওয়া হয়ে যেত। এতক্ষণ কেন্দ্রে ভোটার থাকতেন না। কিন্তু এবার অনেক ভোটারের কাছে স্মার্ট কার্ড থাকার পরও তাঁরা ভোট দিতে পারছেন না। এভাবে ইভিএমের জটিলতার কারণে ভোট পড়বে কম। আশা করেছিলাম, আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান অনেক বেশি হবে। কিন্তু এসব কারণে এখন মনে হচ্ছে, ভোটের ব্যবধান কম হবে।’
ভোটের পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকায় নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ভোটের সঙ্গে জড়িত র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান মোস্তাফিজার রহমান। তিনি বলেন, ‘তাঁরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু ইভিএমে ত্রুটির কারণে ভোটের প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ভোটাররা কেন্দ্রে এলেও সবাই ভোট দিতে পারলেন না। আগামী নির্বাচনে ইভিএমে কীভাবে ভোট হবে, আমার জানা নেই।’