গাইবান্ধার আলোচিত উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

গত বছরের ১২ অক্টোবর এ আসনে ভোট গ্রহণে ব্যাপক অনিয়ম দেখে মাঝপথে নির্বাচন বন্ধ করে দেয় ইসি।

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের জন্য বিভিন্ন কেন্দ্রে ইভিএম ও অন্যান্য নির্বাচনী সামগ্রী নেওয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুরে ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো

আলোচিত গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের (পুনর্ঘোষিত) উপনির্বাচন হবে আজ বুধবার। সকাল সাড়ে আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত। এ জন্য গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম), বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে।

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। গত বছরের ২৩ জুলাই তিনি মারা যান। এরপর গত ১২ অক্টোবর এই আসনে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ মাঝপথে নির্বাচন বন্ধ করে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোট চলাকালে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে ৫১টি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়ম দেখতে পেয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তদন্ত করে বিভিন্ন পর্যায়ের ১৩৪ জন নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গাইবান্ধা-৫ আসন। নির্বাচনের দিন প্রতিটি ইউনিয়নে ১ জন করে মোট ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া কয়েক প্লাটুন র‍্যাব, অস্ত্রধারী আনসার সদস্য ছাড়াও ১ হাজার ৩২০ জন পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

অবাধ ও সুষ্ঠু উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ আসনে ইভিএমে ১৪৫টি কেন্দ্রে ৯৫২টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় ৯টি কেন্দ্রে জেনারেটরের মাধ্যমে ইভিএম চালানো হবে। সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। উপনির্বাচনে মোট পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন।

উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী পাঁচ প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান (রিপন), জাতীয় পার্টির (জাপা) গোলাম শহীদ, বিকল্পধারার জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র নাহিদুজ্জামান ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।

আবার অনিয়ম হলে ব্যবস্থা

নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়মকে একেবারেই প্রশ্রয় দেবে না নির্বাচন কমিশন

(ইসি)। গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে আবার কোনো অনিয়ম হলে মাত্রা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আহসান হাবিব এসব কথা বলেন। আজ বুধবার গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের ১২ অক্টোবর এ আসনে ভোট গ্রহণে ব্যাপক অনিয়ম দেখে মাঝপথে নির্বাচন বন্ধ করে দেয় ইসি। পরে তদন্ত করে বিভিন্ন পর্যায়ের ১৩৪ জন নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব বলেন, গাইবান্ধা উপনির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কমিশন জাতির সামনে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একসঙ্গে কাজ করছেন।

আহসান হাবিব আরও বলেন, ‘অনিয়মের কারণে গাইবান্ধা উপনির্বাচন বন্ধ করা হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে সতর্কতার সঙ্গে গাইবান্ধার প্রতিটি সিচুয়েশন (পরিস্থিতি) আমরা মনিটরিং (পর্যবেক্ষণ) করছি এবং নির্দেশনা দিচ্ছি ও অ্যাকশন (ব্যবস্থা) নিচ্ছি। আমরা কোনো ধরনের অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব ও অস্বচ্ছতাকে প্রশ্রয় দিই না এবং ভবিষ্যতেও দেব না; যার প্রতিফলন হয়েছিল গাইবান্ধা ইলেকশনে (নির্বাচন)। সেখানে আবার ইলেকশন হতে যাচ্ছে। আমাদের কাছে কোনো ছাড় নেই।’