নেত্রকোনায় ইমামতি নিয়ে দ্বন্দ্বে চাচাকে হত্যার অভিযোগে ভাতিজা গ্রেপ্তার
নেত্রকোনার পূর্বধলায় ইমামতি নিয়ে দ্বন্দ্বে হাসিম উদ্দিন (৬৫) নামের এক ব্যক্তিকে মসজিদ প্রাঙ্গণে হত্যার অভিযোগে তাঁর ভাতিজা শাহজাহান মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার ধামরাই এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত হাসিম উদ্দিন উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের জটিয়াবর গ্রামের বাসিন্দা। গ্রেপ্তার শাহজাহান মিয়া হাসিম উদ্দিনের চাচাতো ভাই মৃত আবদুল লতিফের ছেলে।
গত মঙ্গলবার ফজরের নামাজের সময় জটিয়াবর মধ্যপাড়া জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর অভিযুক্ত শাহজাহান এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় হাসিম উদ্দিনের স্ত্রী মাজেদা খাতুন বাদী হয়ে শাহজাহানকে একমাত্র আসামি করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পূর্বধলা থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জটিয়াবর মধ্যপাড়া জামে মসজিদের নির্ধারিত ইমাম মাওলানা শামীম হোসেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রায়ই মসজিদে নামাজ পড়াতেন গ্রামের হাসিম উদ্দিনের ছেলে হাফেজ মো. আজিজুল হক (৩৫)। গত মঙ্গলবার ফজরের নামাজ পড়ানোর সময় ইমাম শামীম হোসেনের অনুপস্থিতিতে আজিজুল হক নামাজ পড়াতে এলে তাঁর চাচাতো ভাই শাহজাহান এতে আপত্তি তোলেন। আজিজুল ও শাহজাহানের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সম্প্রতি বিরোধ চলছিল। শাহজাহান আজিজুলের পেছনে নামাজ না পড়ে মসজিদের বারান্দায় একা নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষ হলে মসজিদ প্রাঙ্গণে আজিজুল ও শাহজাহানের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় আজিজুলের বাবা হাসিম উদ্দিন উভয়কে থামতে বললে ভাতিজা শাহজাহান তাঁর প্রতি চড়াও হন। কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহজাহান হাসিম উদ্দিনকে বেধড়ক কিল-ঘুষি মারলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান।
এ দিকে হাসিম উদ্দিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. লুৎফর রহমান বলেন, গ্রেপ্তার এড়াতে শাহজাহান এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। তাঁকে গ্রেপ্তারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও থানা-পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে দেন নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ। গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শাহজাহানের অবস্থান ঢাকার ধামরাই এলাকার মালঞ্চ গ্রামে বলে জানা যায়। পরে আজ সকালে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. শাহানুর আলমের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।