নিখোঁজের চার দিন পর গৃহবধূর লাশ মিলল শৌচাগারের নালায়

গৃহবধূর লাশ পাওয়া গেছে শৌচাগারের নালায়। স্বজনেরা আহাজারি করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার পাঠান পাড়া গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় নিখোঁজের চার দিন পর গৃহবধূর লাশ পাওয়া গেছে শৌচাগারের নালায়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের পাঠান পাড়া গ্রামে শৌচাগারের নালা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

লাশ উদ্ধার হওয়া গৃহবধূর নাম রোকসানা আকতার (২৮)। তিনি একই গ্রামের মুহাম্মদ আজমের (৪০) স্ত্রী। গত রোববার সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি। এ ঘটনায় সোমবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন আজম।

নিহত রোকসানার বোন তাহমিনা আকতার অভিযোগ করেন, তাঁর বোনের স্বামীর মালিকানাধীন ২০ লাখ টাকার জমি সম্প্রতি বিক্রি করে দেন তাঁর মামা ইসহাক ইউসুফ। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাঁদের মারধর করা হয়েছে। মূলত এ ঘটনা নিয়েই তাঁর বোনকে হত্যা করেছেন ইসহাকেরা।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য অভিযুক্ত ইসহাক ইউসুফের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

নিহত রোকসানার বাবার বাড়ির লোকজন জানান, ২০১৫ সালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের বাচা শাহ গ্রামের মুহাম্মদ মফিজের মেয়ে রোকসানার সঙ্গে রাউজান উপজেলার বাসিন্দা মুহাম্মদ আজমের বিয়ে হয়। আজম পরিবারের এক ছেলে। তাঁদের জমিজমা দেখভাল করতেন তাঁর মামা ইসহাক ইউসুফ। সম্প্রতি জমি বিক্রির ২০ লাখ টাকা আজমদের না দিয়ে ইসহাক আত্মসাৎ করেন। এ নিয়ে দুই পরিবারে বিরোধ বাধে। এর জেরে গত ২৫ নভেম্বর আজমের বাড়িতে ঝগড়া বাধে ও মারামারি হয়। গৃহবধূ রোকসানার মা জান্নাতুল ফেরদৌসকে আটকে রেখে মারধরও করা হয়েছে। পরে রোববার থেকে গৃহবধূ রোকসানা নিখোঁজ হন।

বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য উদয় দত্ত অর্ক বলেন, ‘গৃহবধূ নিখোঁজের দুই দিন পর তাঁর পরিবারের লোকজনকে ওই বাড়িতে আটকে রাখার খবর পেয়ে তাঁদের উদ্ধার করেছিলাম।’

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল হারুন প্রথম আলোকে বলেন, আজ শুক্রবার ময়নাতদন্তের জন্য গৃহবধূর লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হবে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, গৃহবধূকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য বাড়ির পেছনে শৌচাগারের ঢাকনা দেওয়া নালার ভেতর লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।