পরিযায়ী পাখির কিচিরমিচিরে মুখর দুর্গাপুর জলাশয়
কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার দুর্গাপুর জলাশয়ে শত শত পরিযায়ী পাখির বিচরণ। পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মুখর আশপাশের এলাকা। পাখিদের ওড়াউড়ি ও জলকেলিতে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। পরিযায়ী পাখি দেখতে দুর্গাপুর জলাশয় ঘিরে ভিড় করছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন।
দুর্গাপুর এলাকার ব্যবসায়ী শামস কবির ভূঁইয়া বলেন, এ জলাশয়ে কয়েক বছর ধরে পরিযায়ী পাখি আসছে। ওদের কিচিরমিচির আওয়াজ মুগ্ধ করে। এ জলাশয়ে মাছ আছে। পাশে গোমতী নদী। পর্যাপ্ত খাবার থাকায় এখানে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য তৈরি হয়েছে।
পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে বালিহাঁস, শামুকখোল, চখাচখি, পাক, কাইন, রাঙ্গো, টেকুর, কোড়া ও কুদলা এ জলাশয়ে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর শীত মৌসুমে সুদূর সাইবেরিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে অসংখ্য পরিযায়ী পাখি আসে, যা অতিথি পাখি হিসেবে পরিচিত। পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে বালিহাঁস, শামুকখোল, চখাচখি, পাক, কাইন, রাঙ্গো, টেকুর, কোড়া ও কুদলা এ জলাশয়ে আসে।
কুমিল্লার পাখিবিশেষজ্ঞ জামিল খান বলেন, আগে কুমিল্লার ধর্মসাগর ও রেসকোর্সের কুমিল্লা জেলখানা এবং জেলা প্রশাসকের জলাশয়ে পরিযায়ী পাখির অভয়ারণ্য ছিল। এখন আর সেখানে পরিযায়ী পাখি আসে না। ধর্মসাগরে বাণিজ্যিকতার ছোবল পড়েছে। আর রেসকোর্স জলাশয়ে এখন ১৪ তলা ভবন হয়েছে। মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। এ কারণে এখানে পাখি আসছে না দুই তিন বছর ধরে। দুর্গাপুর জলাশয় নিরাপদ হওয়ায় এখানে অতিথি পাখি আসছে।
শীতকালে উত্তর মেরু থেকে হিমালয় অতিক্রম করে পরিযায়ী পাখিরা নাতিশীতোষ্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশে আসে।
সোমবার বেলা ১১টায় সরেজমিনে দেখা যায়, কোনো পাখি ওড়াউড়ি করছে। কোনোটি খাবারের সন্ধানে হাঁটছে। কোনো কোনো পাখি করছে জলকেলি। ডুবসাঁতারে মেতেছে কিছু পাখি।
প্রাণিবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক ও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের উপ কলেজ পরিদর্শক বিজন কুমার চক্রবর্তী বলেন, শীতকালে উত্তর মেরু থেকে হিমালয় অতিক্রম করে পরিযায়ী পাখিরা নাতিশীতোষ্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশে আসে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে এরা বেশি সময় অবস্থান করে। প্রচণ্ড শীত থেকে বাঁচতে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ওরা আসে। ৪২ বছর আগে ঢাকা চিড়িয়াখানায় প্রথম অতিথি পাখির সন্ধান মেলে। এরপর দেশের বিভিন্ন হাওর, বিলে ও জলাশয়ে এদের দেখা মিলছে।