ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার সমর্থনে আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন বলেছেন, ‘মা-বোনদের নিয়ে ইলেকশনের দিন কেন্দ্রে যাবেন। কেন্দ্রে গিয়ে লাইন ধরে দাঁড়াবেন। কলা তো পুষ্টি। নাম্বার ওয়ান প্রতীক। কলার ছড়ি (ছড়া) থেকে আগামী ইলেকশনে বের হয়ে আসবে নৌকা।’
রোববার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল আবদুস সাত্তার ডিগ্রি কলেজের মাঠে এ নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি। ‘আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার সমর্থক গোষ্ঠী’ এ সভার আয়োজন করে।
আহমেদ হোসেন বলেন, ‘এমপি হওয়ার পর বুঝবেন কেমন তেজে, কী কণ্ঠে তিনি (উকিল আবদুস সাত্তার) পার্লামেন্টে কথা বলেন। তাঁর কথা শোনার জন্য দেশবাসী অপেক্ষায় আছে।’
আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক আরও বলেন, ‘আমরা কেন উকিল আবদুস সাত্তারের পক্ষে দাঁড়ালাম, শোনেন। বিএনপি তাঁকে টিস্যু পেপারের মতো ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ালেন। রবিউল ভাই ও মামুন সাহেবকে (ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার) নির্দেশ দিলেন, “তোমরা সকল প্রার্থীকে (দলীয় প্রার্থী) প্রত্যাহার করতে বলো। তাঁর (আবদুস সাত্তার) পাশে দাঁড়াও।” আমাকে তাঁর বার্তা নিয়ে পাঠালেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে এসেছি আপনাদের কাছে। বিএনপি উকিল আবদুস সাত্তারকে অপমান করেছে, বেয়াদবি করেছে ও অসম্মান করেছে। আপনারা কি তাঁকে সম্মান দেবেন না?’
স্থানীয়দের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘রাজশাহীতে জনসভা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন। মাঠ ভরে গেছে। রাস্তা ভরে গেছে। এগুলো সিগন্যাল। বৃষ্টি আসার আগে সিগন্যাল দেয়। সিগন্যাল, সিগন্যাল আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।’
আহমেদ হোসেন আরও বলেন, ‘উনি এমপি হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে বলবেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার আশীর্বাদে আমি এমপি হয়ে এসেছি, আমার একটাই দাবি, আমার কলেজটাকে (উকিল আবদুস সাত্তার ডিগ্রি কলেজ) সরকারিকরণ করে দেবেন।” ইনশা আল্লাহ, হয়ে যাবে। এ জন্য তাঁকে তো ভোট দিয়ে বানাতে হবে। উকিল আবদুস সাত্তারকে এমপি বানালে আরও এক বছর আছে, আরও উন্নতি হবে।’
সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘গণতন্ত্রকে রক্ষা ও গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উকিল আবদুস সাত্তার স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে সাহস করেছেন। এই দুঃসাহসী নাবিক আপনাদের সন্তান। ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশের রাজনীতির সমুদ্র তিনি পাড়ি দিচ্ছেন। গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন আবদুস সাত্তার। তাই আমাদের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাঁকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ ও আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মী হিসেবে আমি কলার ছড়া ও আবদুস সাত্তারের জন্য ভোট চাই। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানাই।’
এ সময় উকিল আবদুস সাত্তার তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমি অন্যায়ের সাথে নাই। আপনাদের কাছে দোয়া চাই।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার বলেন, আবদুস সাত্তারকে জয়ী করানো আওয়ামী লীগের পবিত্র দায়িত্ব। নির্বাচনের দিন আগামী ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রুমিন ফারহানাকে এখানে আসতে দেওয়া হবে না।
অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা ওরফে নাজমা বেগম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম, সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর ও সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হোসেন প্রমুখ।