গাড়িচাপায় বুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যু: তিনজনের নামে পুলিশের মাদক মামলা
পূর্বাচলে পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় বুয়েট শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদ নিহত হওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা হয়েছে। ডোপ টেস্টে (মাদক পরীক্ষা) আসামিদের দুজনের শরীরে অ্যালকোহল ও গাঁজার উপস্থিতি পাওয়ার পর শনিবার রাতে রূপগঞ্জ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মেহেদী হাসান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মাদক সেবন ও বহনের অভিযোগে মুবিন আল মামুন ও মিরাজুলকে এবং মাদকদ্রব্য সেবনে সহায়তার অভিযোগে আসিফ চৌধুরীকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলার আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার তাঁদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আজ রোববার আদালতে শুনানি হবে।
আসামিদের মধ্যে আছেন প্রাইভেট কারের চালক মুবিন আল মামুন (২০)। তিনি রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকার বাসিন্দা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুনের ছেলে। অন্য দুই আসামি হলেন ওই গাড়িতে থাকা মিরপুর পীরেরবাগ এলাকার রিজওয়ানুল করিমের ছেলে মিরাজুল করিম (২২) এবং উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের বাহাউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে আসিফ চৌধুরী।
গত শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে তিন আসামির ডোপ টেস্ট করা হয়। জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মাদক পরীক্ষায় প্রাইভেট কারের চালক মুবিন আল মামুনের শরীরে গাঁজা ও অ্যালকোহল পাওয়া গেছে। আর আরোহীদের মধ্যে মিরাজুল করিমের শরীরে অ্যালকোহল পাওয়া গেছে। অপরজন আসিফ চৌধুরীর শরীরে অ্যালকোহল–জাতীয় কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।
মামলায় আসিফ চৌধুরীকে অন্য আসামিদের সহযোগীতার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে পূর্বাচল ৩০০ ফিট নীলা মার্কেট (কুড়িল-কাঞ্চন সড়ক) এলাকায় পুলিশের তল্লাশচৌকিতে একটি প্রাইভেটকার সজোরে ধাক্কা দেয়। এ সময় তল্লাশিচৌকিতে দাঁড়ানো বুয়েটের তিন মোটরসাইকেল আরোহী শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান বুয়েটের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মুহতাসিম মাসুদ। আহত হন মুহতাসিমের দুই সহপাঠী মেহেদী হাসান খান (২২) ও অমিত সাহা (২২)। ঘটনাস্থল থেকেই গাড়িচালকসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আটকের পরপরই আসামিদের শরীর থেকে অ্যালকোহলের গন্ধ পাওয়া যায়। পরে থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেও মুবিন আল মামুন মাদক গ্রহণের কথা স্বীকার করেন। পরে মাদক পরীক্ষায় তিন আসামির দুজনের শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এ ছাড়া ঘটনার সময় ধাক্কা দেওয়া গাড়ি থেকে একটি খালি মদের বোতল ও একটি বাংলাদেশি বিয়ারের ক্যান পাওয়া যায়।