সরাইলে চকলেট মনে করে তেলাপোকা মারার বিষ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় খেলার ছলে চকলেট মনে করে ইঁদুরের বিষ খেয়ে চার বছর বয়সী দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের বারপাকিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই দুই শিশু হলো ফাতেমা বেগম (৪) ও জান্নাত আক্তার (৪)। ফাতেমা উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের বারপাকিয়া এলাকার ইলিয়াস মিয়ার মেয়ে ও জান্নাত একই এলাকার কাশেম মিয়ার মেয়ে। তারা সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো বোন। জান্নাত ছয় ভাইয়ের একমাত্র বোন ছিল। অন্যদিকে তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয় ছিল ফাতেমা।
ফাতেমার চাচা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ইঁদুরের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে খাটের নিচে গর্ত করে সেখানে বড়ি আকারের ইঁদুর মারার বিষ রাখা হয়েছিল। খেলার ছলে দুই শিশু খাটের নিচে গিয়ে বড়ি আকারের ওই বিষ মুখে দেয়। অসুস্থ হয়ে পড়লে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের মৃত্যু হয়।
উপজেলার অরুয়াইল গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, উপজেলা সদরের সঙ্গে অরুয়াইলের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত নয়, দূরত্বও অনেক। রাস্তার বেহাল দশার জন্য অরুয়াইল থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে উপজেলা সদরে যেতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। সেখান থেকে জেলা শহরে যেতে আরও সময় লাগে। জেলা ও উপজেলা সদরের সঙ্গে অনুন্নত সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার কারণে শিশুদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়নি। যে কারণে সঠিক সময়ে চিকিৎসা দিতে না পারায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া জানান, বারপাকিয়া এলাকার ইলিয়াস মিয়ার বাড়িতে ওই দুই শিশু খেলা করছিল। খেলার এক ফাঁকে তারা হয়তো চকলেট মনে করে ঘরের খাটের নিচে ইঁদুরের গর্তে থাকা ট্যাবলেট আকারের বিষ খেয়ে ফেলে। পরিবারের লোকজনই এ গর্তে বিষ দিয়ে রেখেছিলেন। বিষ খাওয়ার পর বমি করতে দেখে স্বজনেরা তাদের উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফাতেমাকে মৃত ঘোষণা করেন। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে সেখানে জান্নাতের মৃত্যু হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় উপজেলা সদরে যেতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা এবং জেলা সদরে যেতে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। দুই শিশুদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেওয়া যায়নি।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম হোসেন জানান, ইঁদুরের ওষুধ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি।