আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই: মাওলানা মামুনুল হক

চট্টগ্রামে গণ সমাবেশে বক্তব্য দেন মাওলানা মামুনুল হক। আজ বিকেলে নগরের লালদীঘির ময়দানেছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, শেখ হাসিনার রাজনীতি বাংলার মাটিতে চলবে না। আওয়ামী লীগের রাজনীতিও বাংলার মাটিতে চলবে না। সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ছাত্রলীগের চেয়ে অনেক বেশি সন্ত্রাস করেছে যুবলীগ। তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি সন্ত্রাস করেছে আওয়ামী লীগ। যে কারণে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, সেই কারণে যুবলীগ নিষিদ্ধ হতে হবে, হাতুড়ি লীগ নিষিদ্ধ হতে হবে, হেলমেট লীগ নিষিদ্ধ হতে হবে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।

আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি মাঠে দলটির গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার প্রতিশোধের রাজনীতির পতন ঘটেছে। তিনি বিভাজনের রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ব্যবসার পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করে মানুষকে বিভক্ত করে রেখেছিলেন। ছাত্র-জনতা যখন অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে নামলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে স্লোগান তুললেন, তখন শেখ হাসিনা রাজাকারের বাচ্চা বলে বিদ্রূপ করলেন।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে জনগণের আন্দোলনের সামনে ক্ষমতা ত্যাগ করার নজির অনেক রয়েছে। ১৯৯০ সালে জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতার মসনদ ত্যাগ করেছেন। কিন্তু এরশাদ তাঁর নেতা-কর্মীদের এতিম করে পালিয়ে যাননি। পাঁচ বছর জেল খেটেছেন। ২০০৬ সালে খালেদা জিয়াও ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। দেশের মাটি ছেড়ে অন্য কোথাও পালিয়ে যাননি। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেন।

শেখ হাসিনার বিচার দাবি করে মামুনুল হক বলেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। তাঁর বিচার করতে হবে। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দিয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘সব সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনে ইসলামি সংগঠনগুলো সব ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করবে। পরাজিত স্বৈরাচারী সরকার ও সরকারের দোসররা প্রভুর কোলে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আগস্ট বিপ্লব ব্যর্থ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আগস্ট বিপ্লব ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়ে যাবে।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম নগর ও জেলার উদ্যোগে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির নায়েবে আমির আলী উসমান।

চট্টগ্রামে সমাবেশের আগে নোয়াখালীতে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। প্রথম আলোর নোয়াখালী প্রতিবেদক জানান, আজ দুপুরে নোয়াখালীর চৌমুহনী রেলওয়ে ময়দানে আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন। পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করার তাগিদ দেন তিনি।