‘আগে বলত বিএনপি-জামায়াত, এখন বলছে আওয়ামী লীগ’

ময়মনসিংহের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজছবি: প্রথম আলো

তিন বছর আগে ময়মনসিংহের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের সময় মো. আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তিনি বিএনপি-জামায়াতের অনুসারী। দিনে দিনে সেই তকমা দূর হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নতুন করে তাঁকে আওয়ামী লীগের লোক বলে অভিযোগ করছে একটি পক্ষ। তারা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নামিয়েছে বলে অভিযোগ অধ্যক্ষের।

সরকার পতনের পর আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলন করছেন। তবে অধ্যক্ষের পদত্যাগ রুখতে পাল্টা আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীদের একটা পক্ষ। শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি আন্দোলনে কলেজে একধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের পেছনে কলেজের একটি স্বার্থান্বেষী মহলের হাত আছে। অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকেই ওই মহল তাঁর পেছনে লেগে আছে। এতে প্রতিষ্ঠানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা পদত্যাগ করছেন। কোথাও কোথাও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। ১৩ আগস্ট সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে কিছু শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীদের আরেকটি পক্ষ পদত্যাগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে তাঁর কার্যালয়ে তালা দেন। পরে কিছু শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে উপাধ্যক্ষ নুরুল আফসার তালা ভেঙে নিজের কার্যালয়ে যান। এর পর থেকেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একধরনের অস্থিরতা কাজ করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, সরকারের পতনের পর থেকে শিক্ষকদের মধ্যেই একধরনের অস্থিরতা শুরু হয়। ৬ আগস্ট একাধিক শিক্ষক কলেজের শিক্ষকদের সব কমিটি ভেঙে দিতে অধ্যক্ষের ওপর চাপ দেন। অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহ ওই দিনই শিক্ষকদের নিয়ে জরুরি সভা করেন। ওই সভায় শিক্ষকদের সব কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়।

অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা যতটুকু সোচ্চার, তার চেয়ে বেশি সোচ্চার কলেজের স্বার্থান্বেষী একটি মহল। তারা কখনো আমাকে জামায়াত-বিএনপি, কখনো আওয়ামী লীগ বানিয়ে ফেলছে। এগুলো হীন ষড়যন্ত্র, যা এখনো চলছে।’