সিলেটে আরও পাঁচটি হত্যা মামলা, প্রধান আসামি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ

বাঁ থেকে—সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি এবং গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আমিনুল ইসলাম
ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় সিলেটের বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জে তিন দিনে আরও পাঁচটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক এ পাঁচটি মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদকে। এর বাইরে ২৩ আগস্ট গোলাপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছিল। সেটিরও প্রধান আসামি করা হয়েছিল নুরুল ইসলাম নাহিদকে।

নতুন মামলাগুলোর মধ্যে গোলাপগঞ্জ থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। ৪ আগস্ট গোলাপগঞ্জে ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ, বিজিবি, আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে সাতজন নিহত হন। এসব ঘটনায় এই থানায় নতুন তিনটিসহ মোট চারটি মামলা হলো।

এর মধ্যে ওই দিন গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নে সংঘর্ষে ছানি আহমদ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই ইউনিয়নের শিলঘাট এলাকায় তাঁর বাড়ি। ছানির বাবা কয়ছর আহমদ বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় আজ মঙ্গলবার সকালে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় নুরুল ইসলাম নাহিদসহ ১১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ৮০-৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

একই থানায় গতকাল সোমবার রাতে আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে। এই মামলায় বাদী হয়েছেন গুলিতে নিহত ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের দত্তরাইল গ্রামের মিনহাজ উদ্দিনের বড় ভাই সাঈদ আলম। মামলার প্রধান আসামি নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ ছাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি, সাবেক পৌর মেয়র আমিনুল ইসলামসহ ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গত রোববার রাতে গোলাপগঞ্জ থানায় আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে। এই মামলার বাদী গুলিতে নিহত ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের নিহত নাজমুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা মাহিরুল। তাঁর মামলায় নুরুল ইসলাম নাহিদকে প্রধান আসামি করে উপজেলার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি, পৌর মেয়রসহ ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০-১১০ জনকে।

গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ আব্দুন নাসের বলেন, চারটি হত্যা মামলা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে সোমবার বিয়ানীবাজার থানায় দুটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এই মামলার বাদী ৫ আগস্ট গুলিতে নিহত ময়নুল ইসলামের স্ত্রী শিরিন বেগম। এতে প্রধান আসামি নুরুল ইসলাম নাহিদ, সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খান, আরেক সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আব্বাস উদ্দিনসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮০-৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে আরেক নিহত রায়হান উদ্দিনের বড় ভাই বোরহান উদ্দিন বাদী হয়ে সোমবার আরেকটি মামলা করেছেন। এ মামলায় নুরুল ইসলাম নাহিদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি অকিল উদ্দিন আহম্মদ বলেন, এই দুই হত্যা মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে।