ধামরাইয়ে বেতন বাড়ানোর দাবিতে মহাসড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
ঢাকার ধামরাইয়ে বেতন বাড়ানোর দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ করছেন একটি জুতা কারখানার শ্রমিকেরা। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ফ্রেম হাউস ফুটওয়্যার লিমিটেড নামের ওই কারখানার শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কারখানার শ্রমিকেরা জানান, আজ সকাল আটটার দিকে কারখানায় আসেন শ্রমিকেরা। পরে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক কারখানা–সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন। তাঁরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে ধামরাই থানা–পুলিশ ও শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। কারখানার একাধিক কর্মকর্তাও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করার আশ্বাস দিয়ে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলেন। তবে কারখানার ব্যবস্থাপক লিখিতভাবে বিষয়টি না জানানো পর্যন্ত সড়ক ছাড়বেন না বলে জানিয়ে দেন শ্রমিকেরা।
একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে শ্রমিকেরা মহাসড়কের নিরবচ্ছিন্নভাবে যানবাহন চলাচলের লেন থেকে সরে গিয়ে কারখানার সামনের দিকের সার্ভিস লেনে অবস্থান নেন। এতে নিরবচ্ছিন্নভাবে যানবাহন চলাচলের লেনে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কারখানার এক শ্রমিক বলেন, ‘পেটের দায়ে কাজ করতে আসছি। আমাগো ৭ হাজার ১০০ টাকা বেতন দেয়। এই টাকা দিয়ে ঘরভাড়া, খাবার, বাচ্চার লেখাপড়া কোনো কিছুই ঠিকমতো করতে পারি না। কষ্ট কইরা চলতাছি। আমাদের বেতন বাড়াইতে হবে।’
গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর পর তাঁদের বেতন বাড়াতে শ্রমিকেরা একাধিকবার কারখানার মহাব্যবস্থাপককে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু কাজ না হওয়ায় রাস্তায় নেমেছেন জানিয়ে এক শ্রমিক বলেন, ‘গার্মেন্টসে বেতন বাড়ছে। তাঁরা বেতন পায় ১২ হাজার ৫০০ টাকা। আর আমরা পাই ৭ হাজার ১০০ টাকা। দ্রব্যমূল্য সবার জন্যই বাড়ছে। তাইলে ওদের বেতন বাড়ছে, আমাদের বাড়াবে না কেন? সবার জন্য সমান হতে হবে।’
এ বিষয়ে কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) জামান বসুনিয়া বলেন, ফুটওয়্যার সেক্টরে এখনো বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তাঁদের মালিকপক্ষ শ্রম মন্ত্রণালয় ও ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনে যোগাযোগ করে বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে করণীয় জানতে চেয়েছিল। মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। জামান বসুনিয়া বলেন, আজকের বিক্ষোভের পর তিনি মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখান থেকে এ মাসেই শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সরকার বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা দিলে সে অনুসারে বেতন বাড়ানো হবে।
শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাসের বলেন, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সকাল থেকে শ্রমিকেরা আন্দোলন করছেন। শুরুতে তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করলেও পরে তাঁদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সমস্যার সমাধানে শ্রমিক প্রতিনিধি, শিল্প পুলিশ ও মালিকপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে।