টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়রসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক
ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক ওরফে আলমগীরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুদক টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. বিপ্লব হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার অন্য পাঁচ আসামি হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিকস্ অ্যান্ড ব্রিজেজ লিমিটেড অ্যান্ড দ্য নির্মিতি’র (জেভি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা মোহাম্মদ মাসুদ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত) এ কে এম রশিদ আহম্মদ, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজীব কুমার গুহ ও উপসহকারী প্রকৌশলী এ কে এম জিন্নাতুল হক। তাঁদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৭৩ লাখ ২৮ হাজার ৯৫৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টাঙ্গাইল পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (টিপিআইআইপি) আওতায় এলজিইডির অর্থায়নে শহরের বেড়াডোমা এলাকার লৌহজং নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পৌরসভা। ৪০ মিটার দীর্ঘ এই আর্চ সেতুর নির্মাণের কাজ পায় ব্রিকস্ অ্যান্ড ব্রিজেজ লিমিটেড অ্যান্ড দ্য নির্মিতি (জেভি) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৩ কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার ৮৪১ টাকা ব্যয়ে এই সেতুর কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর। ২০২২ সালের ১১ মে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর চারটি বিলের মাধ্যমে ঠিকাদারকে ২ কোটি ৮০ লাখ ৫৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

মামলায় আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ১৬ মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির গার্ডার ও ক্রস গার্ডার এবং দুই দিন পর ডিক স্ল্যাব ঢালাই করে। ঢালাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে চতুর্থ বিলের জন্য আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র এস এম সিরাজুল হক, নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজীব কুমার গুহ ও উপসহকারী প্রকৌশলী এ কে এম জিন্নাতুল হক প্রত্যয়ন করেন, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের মান সন্তোষজনক হওয়ায় ঠিকাদারকে চতুর্থ বিল বাবদ ৯০ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯৪ টাকা পরিশোধ করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করেন তাঁরা। সে অনুযায়ী ৬ জুন বিল পরিশোধ করা হয়। এরপর ওই বছরের ১৬ জুন সেতুটি ধসে পড়ে।

মামলায় বলা হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সেতুটি নির্মাণকাজে যথেষ্ট অবহেলা করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নকশা অনুসরণ না করে কাজ করলেও পৌরসভার প্রকৌশলীরা কাজ বন্ধ না করে দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছেন। পৌরসভার মেয়র প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম হচ্ছে জেনেও কোনো পদক্ষেপ নেননি।