স্বর্ণা দাসের পর আর যাতে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড না হয়, সেই উদ্যোগ নিতে হবে
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতারা বলেছেন, কিশোরী স্বর্ণাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সীমান্ত হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশে নতুন কোনো ঘটনা নয়। সারা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এসব হত্যাকাণ্ডের বিপক্ষে জেলায় জেলায়, উপজেলায় উপজেলায় এবং বিশ্ব পরিসরে কথা বলেবন, প্রতিবাদ জানাবেন।
আজ শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামে স্বর্ণা দাসের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার পর এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতারা এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক সমন্বয়ক ফরিদুল হক বলেন, ‘অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেত। অথচ তা না করে গুলি করে মানুষকে হত্যা করা হয়। এটা চরম মানবতাবিরোধী ও আইনবিরুদ্ধ কাজ। স্বর্ণা হত্যাকাণ্ডের পর যাতে আর এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। গত ১৫ বছরে এই প্রথম এ রকম প্রতিবাদ জানানো হলো। আমরা সরকারকে অনুরোধ করব, যদি ভারত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আন্তর্জাতিক আদালতের আশ্রয় নিতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ সরকারের সঙ্গে থাকবে।’
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতারা আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে শুধু ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সীমান্ত ছাড়া আর কোনো সীমান্তে এ রকম মানুষ হত্যা করা হয় না। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশসহ চীন, পাকিস্তান ও নেপালের সীমান্ত রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়া সীমান্তের আর কোথাও কাঁটাতারের বেড়া নেই। আমাদের তিন দিক তারা কাাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে। ভারত আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র বলে। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে কিসের বন্ধুত্ব রক্ষা করতে চায় তারা। তারা প্রতিনিয়ত শত্রুভাবাপন্ন আচরণ করছে।’
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক সমন্বয়ক ফরিদুল হক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য প্রীতম দাশের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আজ শনিবার স্বর্ণা রানী দাসদের বাড়িতে যায়। এই সময় সংগঠনের শ্রীমঙ্গল উপজেলা সংগঠক শাহেদ আহমদ ও চুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম।
মিডিয়া ব্রিফিংয়ে নিহত স্বর্ণার বাবা পরেন্দ্র দাস, পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মদনমোহন দাস, স্কুলশিক্ষক ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দিবাকর দাসসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোক উপস্থিত ছিলেন।
১ সেপ্টেম্বর মা সঞ্জিতা রানী দাসের সঙ্গে কিশোরী স্বর্ণা (১৪) কুলাউড়া উপজেলার লালারচক সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে ভারতে আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিল। এ সময় বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে স্বর্ণা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তার বুকে গুলি লাগে। সে জুড়ীর নিরোদ বিহারী উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। পরে বিএসএফ তার লাশ নিয়ে যায়। ৩ সেপ্টেম্বর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ স্বজনদের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করে।