২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

বরিশালে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ১৬ নেতা-কর্মী আটক

বরিশাল নগরের সিঅ্যান্ডবি সড়কে অবরোধের সমর্থনে বুধবার সকালে মিছিলের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহানকে আটক করেছে পুলিশ
ছবি: প্রথম আলো

দেশজুড়ে ডাকা বিএনপির অবরোধের দ্বিতীয় দিনে বরিশালে মিছিলের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহানসহ ১০ জনকে আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ। আজ বুধবার সকালে নগরের সিঅ্যান্ডবি সড়ক ও বটতলা নবগ্রাম সড়ক এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, যান চলাচলে বাধা প্রদানসহ অরাজকতা সৃষ্টির অভিযোগে তাঁদের আটক করা হয়েছে। এসব ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

তবে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। মহানগর বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে আজ সকালে এ তথ্য জানানো হয়। আটক নেতা-কর্মীরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান, নগর কমিটির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান, নগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আলী হায়দার, নগর কমিটির সদস্য আবু মুসা, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্যসচিব সাব্বির আলী শেখ, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্যসচিব হানিফ হাওলাদার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক দ্বীন ইসলাম, মোহাম্মদ আনিস, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য শামসুল আলম, মহানগর মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফেরদৌস হাওলাদার, ছাত্রদল কর্মী সাকলাইন মোস্তফা, যুবদল কর্মী রেজাউল রহমান, চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী কাজী মোহাম্মদ ফিরোজ, শ্রমিক দলের কর্মী মোহাম্মদ আসলাম হোসেন ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদল কর্মী রাশেদুজ্জামান খান।

দলীয় সূত্র জানায়, আজ সকাল সাতটার দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে অবরোধের সমর্থনে মিছিল করার পর সেখান থেকে বিলকিস আক্তার জাহান, আবুল হোসেন খান ও আলী হায়দারকে আটক করে পুলিশ। এ ছাড়া নগরের নবগ্রাম সড়কে অভিযান চালিয়ে মনিরুজ্জামান খানসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়।

দ্বিতীয় দিনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ

দেশব্যাপী বিএনপির ডাকা অবরোধ সফল করতে দ্বিতীয় দিনে বরিশালে ঝটিকা মিছিল করেছেন মহানগর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। আজ সকাল সোয়া ৭টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বান্দরোডে বিক্ষোভ মিছিল বের করে মহানগর ছাত্রদল। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম। এ সময় তাঁরা সড়কের ওপরে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন।

অন্যদিকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি সবুজ আকনের নেতৃত্বে বিমানবন্দর থানার সাতমাইল এলাকায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধের পক্ষে বিক্ষোভ করেন নেতা-কর্মীরা।

ঝটিকা মিছিল ও অবরোধের চেষ্টার বাইরে স্বাভাবিক দিন পার করছেন বরিশালবাসী। সকাল থেকে নগরের অভ্যন্তরে সব ধরনের তিন চাকার যানসহ গণপরিবহনের চলাচল স্বাভাবিক আছে। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ ও রুপাতলী থেকে অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লার সব বাস চলাচল করছে। স্বাভাবিক আছে লঞ্চ চলাচলও।

অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে সড়কগুলোতে। ব্যবসা–বাণিজ্য, আদালত, শিক্ষাকার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। তবে সড়কে সতর্ক অবস্থানে আছে পুলিশ। কাউকে সন্দেহ হলে করা হচ্ছে তল্লাশি। পাশাপাশি নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

হিজলায় তিনজন গ্রেপ্তার

বরিশালের হিজলা উপজেলায় অবরোধের পক্ষে মিছিলের পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার কাউরিয়া এলাকায় মিছিলের পর বিকেলে ওই তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন হিজলা উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক গিয়াসউদ্দিন দেওয়ান ও বড়জালিয়া ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহবুদ্দিন পেয়াদা।

হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান বলেন, গতকাল দুপুরে স্থানীয় কাউরিয়া টেকেরহাটের শ্রীপুর এলাকায় অবরোধের সমর্থনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল করেন। এর পর থেকে পুলিশ বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। বিকেলে উপজেলার বাসস্ট্যান্ড থেকে তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
হিজলা থানার ওসি জোবায়ের আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে মামলা করা হবে। ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।