বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
ভেঙে পড়া প্রাচীর মেরামত করার কোনো উদ্যোগ নেই
৫ ও ৬ অক্টোবর ভারী বর্ষণে পার্কের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এ সময় কোর সাফারির ইটের প্রাচীরের কয়েক জায়গা ভেঙে পড়ে।
গত মাসের শুরুর দিকে ভারী বর্ষণে গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রাচীরের কয়েকটি জায়গা ভেঙে পড়ে। এরপর এক মাস পার হয়ে গেলেও প্রাচীর মেরামত করা হয়নি। বাজেট সংকটের কথা বলছে কর্তৃপক্ষ। ভাঙা প্রাচীরের পাশেই রয়েছে কোর সাফারি অংশ। নিরাপত্তার কারণে সেখানে পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোর সাফারির ভেতরে আফ্রিকান সাফারির চারটি জায়গায় প্রাচীর ভেঙে গেছে। এ ছাড়া হরিণ সাফারির প্রাচীরের পাঁচ জায়গায়, সিংহের বেষ্টনীর পুরোনো দেয়াল এবং বাঘের প্রাচীরের একটি অংশ ভেঙে গেছে। এতে সেখানে থাকা প্রাণীর আবাসস্থল অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সেখানে দর্শনার্থীর চলাচল বন্ধ রেখেছে। কোর সাফারির ওই অংশে বাঘ, সিংহ, ভালুক, জেব্রা, জিরাফ, ওয়াইল্ডবিস্টসহ বিভিন্ন প্রাণীর বসতি। বিশেষায়িত পর্যটন বাসে চড়িয়ে দর্শনার্থীদের এসব প্রাণীর বেষ্টনী ঘুরিয়ে দেখানো হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে পার্কের বাইরে বেলতলী এলাকায় দেখা যায়, পার্কের মূল দেয়ালের প্রায় ২০ ফুট জায়গাজুড়ে ভেঙে পড়েছে। সেখানে গাছের ডাল ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। স্বল্প দূরত্বে ওই দেয়ালের আরও কয়েক জায়গায় ভাঙন দেখা যায়। এ ছাড়া পার্কের ২ নম্বর ফটকের অদূরে ও বারতোপা গ্রামের দিকে পার্কের দেয়াল ভাঙা দেখা যায়। সেখানে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে অস্থায়ী বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে।
পার্ক–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ভারী বর্ষণের দিন বেশির ভাগ বেষ্টনীতে অস্বাভাবিক উচ্চতায় পানি জমে গিয়েছিল। ভেতরে বেশ কয়েকটি গভীর লেক থাকায় বৃষ্টির পানির বেশির ভাগ দ্রুত সময়ের মধ্যে সরে যায়। তবে বৃষ্টি চলাকালে কোর সাফারির ভেতরে বিভিন্ন প্রাণীর বেষ্টনীগুলো অরক্ষিত হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক মানবপ্রাচীর তৈরি করে প্রাণীগুলোকে বের হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করেন পার্কের কর্মীরা। পরে কাঠ দিয়ে অস্থায়ী বেষ্টনী তৈরি করা হয়।
পার্কের একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, ভারী বর্ষণ শুরু হলে আগে থেকে পার্ক কতৃপক্ষ বাঘ, সিংহ ও ভালুক নির্দিষ্ট খাঁচায় বন্দী করে রাখে। ফলে দেয়াল ভাঙলেও হিংস্র প্রাণীগুলো বেরিয়ে যেতে পারেনি।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, সংস্কারের জন্য শিগগিরই কার্যাদেশ আহ্বান করা হবে। তিনি বলেন, পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরি বরাদ্দ দরকার।