গাজীপুরে দুই কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ, চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ
গাজীপুরের জিরানী ও চক্রবর্তী এলাকায় আজ বুধবার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। এ সময় তাঁরা চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করেন। এতে উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েছেন ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা।
কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো আজ সকাল ৯টা থেকে গাজীপুর মহানগরীর সারাব এলাকার বেক্সিমকো ইন্ডস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা পাশের চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বেক্সিমকোর এক অপারেটর বিল্লাল হোসেন বলেন, গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ আজ বেতন পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছিল। সেই কথা অনুযায়ী তাঁদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে শ্রমিকেরা সকাল থেকে বিক্ষোভ করছেন। বেতন–ভাতা না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা সড়ক ছাড়বেন না।
এদিকে জিরানী এলাকায় ‘দ্যাটস ইট নিট লিমিটেড’ কারখানার শ্রমিকেরা সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কাজে যাচ্ছিলেন। চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অতিক্রম করার সময় নবীনগরগামী পলাশ পরিবহনের একটি বাস শ্রমিকদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে অন্তত ছয় শ্রমিক আহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। এ সময় দুর্ঘটনায় এক নারী শ্রমিক নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের জিরানী এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এ সময় তাঁরা বেশ কয়েকটি বাসও ভাঙচুর করেন।
এ সময় দ্যাটস ইট নিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা দুই কর্মকর্তার পদত্যাগ, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, হতাহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ ১২ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে কথা বলে সমাধান করার আশ্বাস দিলে বেলা ১১টার দিকে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।
দ্যাটস ইট নিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিক আবুল হাসান বলেন, ‘পলাশ পরিবহনের বাসের চাপায় আমাদের ছয় শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ কারণে আমরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছি।’
ওই কারখানার ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ) আবু সাঈদ বলেন, ‘দুর্ঘটনা হয়েছে কারখানার বাইরে। আমাদের তো কোনো সমস্যা দেখছি না। এ ছাড়া তাঁদের ১২ দফা দাবির বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’
কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, সকাল ৯টা থেকে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এতে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন আছেন।