বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীরের পাঁচ বছরে আয় দেড় গুণ ও সম্পদ প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। আগে শূন্য আয়ের কৃষিতে এখন এক লাখ টাকা পান তিনি। বাড়িভাড়া এক লাখ টাকার স্থলে এখন ২ লাখ ৮০ টাকা হয়েছে। বাড়ির ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকার বৈদ্যুতিক সামগ্রী বেড়ে এখন হয়েছে ১৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এভাবে প্রতিটি খাতের অগ্রগতিতে প্রায় ২৮ লাখ টাকার বার্ষিক আয় বেড়ে এখন ৩৮ লাখ টাকা হয়েছে।
অপর দিকে এ কে এম জাহাঙ্গীরের প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুসের হলফনামা অনুযায়ী প্রদর্শিত কোনো আয় নেই। তবে অস্থাবর সম্পদের হিসাবে ব্যাংকে আমানত রয়েছে পাঁচ লাখ টাকা।
বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন দলের এ কে এম জাহাঙ্গীর ও বিএনপির সাবেক উপজেলা সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। আব্দুল কুদ্দুসও চারবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁদের সর্বশেষ দুই নির্বাচনের হলফনামা যাচাই করে দেখা যায়, অস্থাবর সম্পদের বিবরণে এ কে এম জাহাঙ্গীরের ২০১৯ সালে কোনো ব্যবসায়িক বিনিয়োগ ছিল না। ব্যাংকে জমা ছিল ৯ লাখ ২৫ হাজার ৩০০ টাকা। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মেসার্স মাদার টেলিকম নামে একটি প্রতিষ্ঠানে মালিক হিসেবে তাঁর ৯০ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। স্থাবর সম্পদও বেড়েছে তাঁর। ২০১৯ সালের হলফনামায় রাবারবাগান ৫০ একর ও অন্যান্য কৃষিজমি ১৫ একর, তিনটি বাজার ফান্ডের বাণিজ্যিক প্লট, দুটি ফ্ল্যাট বুকিংসহ ২২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দেখানো হয়েছিল। বর্তমানে তা সাড়ে চার গুণ বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
হলফনামার বিবরণে পাঁচ বছরে পৌনে ৪ লাখ টাকায় সাড়ে তিন একর কলাবাগান, ২৩ লাখ টাকায় ৫৪ শতক ভিটেবাড়ি, ২৫ লাখ টাকায় ৭৫ শতক অবকাশযাপন কেন্দ্র (রিসোর্ট) নির্মাণের জমি, ৩০ লাখ টাকায় স্থাপনাসহ বাজার ফান্ডের দুটি প্লট কেনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ব্যাংকে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে বলেও হলফনামায় বলা হয়েছে।
সম্পদ বৃদ্ধির ব্যাপারে এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেছেন, ব্যবসায়িক প্রসারে তাঁর আয় কিছুটা বাড়লেও সম্পদ বৃদ্ধির বিষয়টি ঠিক নয়। ব্যাংকঋণ বেড়ে যাওয়ায় সম্পদ বৃদ্ধি হয়েছে মনে হতে পারে।
আব্দুল কুদ্দুসের ২০১৯ সালের হলফনামায় উপজেলা চেয়ারম্যান (২০১৪ সালে তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন) হিসেবে প্রাপ্ত ভাতাকে আয় দেখিয়েছিলেন। এবারের হলফনামায় কোনো আয় দেখানো হয়নি। নির্ভরশীলদের আয় দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদও ২০১৪ সালের মতোই রয়েছে।
আয় ছাড়া কীভাবে নির্বাচন করবেন, জানতে চাইলে আব্দুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, বাস্তবিক তাঁর কোনো আয় নেই। শুধু ছেলেমেয়েদের আয়ে তিনি চলেন। ছেলেমেয়ে ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের আশ্বাসে তিনি নির্বাচনে নেমেছেন। তাঁরা নির্বাচনী খরচ বহন করবেন।