আচরণবিধি লঙ্ঘনকে অনিচ্ছাকৃত বলে দাবি করলেন মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাস
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত বলে দাবি করেছেন মুন্সিগঞ্জ-৩ (সদর-গজারিয়া) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাস। সেই সঙ্গে পরবর্তী সময়ে এমনটা হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে শোকজের জবাব দিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আজ শনিবার ওই আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মুন্সিগঞ্জের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২-এর বিচারক ফাহমিদা খাতুনের দপ্তরে উপস্থিত হয়ে তিনি ব্যাখ্যা দেন। পরে এ বিষয়ে অভিযোগকারী সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাজমুল হাসানের বক্তব্যও শোনেন বিচারক।
নাজমুল হাসান মৃণাল কান্তি দাসের বিরুদ্ধে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কাছে অভিযোগ করেন। নাজমুল বলেন, মৃণাল কান্তি দাস সভা-সমাবেশ ও মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন।
নাজমুল মুন্সিগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তিনি এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. ফয়সালের সমর্থক। মৃণাল কান্তি দাস কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক।
শোকজের ব্যাখ্যা দিয়ে মৃণাল কান্তি দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেদিনের ঘটনাটি অনভিপ্রেত। আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ায় নির্বাচনী এলাকার মানুষ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জ পৌঁছালে সাধারণ মানুষ আমাকে ঘিরে উচ্ছ্বাস করেছেন। আমি ২-১ মিনিট কথা বলেই তাঁদের আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছি।’
মৃণাল কান্তি আরও বলেন, ‘আমি নির্বাচনের আচরণবিধির শতভাগ মেনে চলব। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন নির্বাচন কমিশন অবাধ সুষ্ঠুভাবে এবং অংশগ্রহণমূলক করতে পারে এবং ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারে, সে বিষয়ে সহযোগিতা করব।’
সাক্ষ্য দেওয়া শেষে অভিযোগকারী নাজমুল হাসান বলেন, ‘দুপুর আড়াইটার দিকে আমাকে ডাকা হয়। সেখানে ঘটনার সাক্ষ্য দিই। অনুসন্ধান কমিটি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেবে বলে জানান। সেই সঙ্গে সবাইকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার জন্য নির্দেশনা দেন।’
২০১৪ ও ২০১৮ সালে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচন করে টানা দুবার সংসদ সদস্য হন মৃণাল কান্তি দাস। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও দলের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। মনোনয়ন পাওয়ার পর গত সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জে আসেন তিনি। তাঁর আসার খবরে জেলা শহরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা পথে পথে ফুলের মালা, ফুলের নৌকা নিয়ে জড়ো হন। ওই দিন বিকেলে সংসদ সদস্য মুন্সিগঞ্জ সদর এলাকায় প্রবেশ করেন। এ সময় সিপাহিপাড়া এলাকার প্রধান সড়ক হয়ে একটি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। বিকেল পাঁচটায় মৃণাল কান্তি দাস শহরের সুপারমার্কেট গোলচত্বর এলাকায় আসেন। স্লোগানমুখর মিছিল নিয়ে শত শত নেতা-কর্মী সুপারমার্কেট এলাকায় জড়ো হন। এতে মুন্সিগঞ্জ শহরের থানা সড়ক, হাসপাতাল সড়ক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানও অভিযোগ করেন। বিষয়টি নজরে এলে তদন্ত করে সত্যতা পান নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। পরে সংসদ সদস্যকে আজ বেলা ১১টার মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেন।