মুন্সিগঞ্জে অটোরিকশাচালক হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড
মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় অটোরিকশাচালক মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন শেখ (২২) হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা দণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন ঊর্মি আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। এ ছাড়া অন্য একটি ধারায় দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
নিহত মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন শেখ টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আউটশাহী ইউনিয়নের চাষীরি গ্রামের আবুল শেখের ছেলে। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামের সাঈদ শেখের ছেলে ইলিয়াস হোসেন (৩২) ও লৌইজং উপজেলার পয়সা গ্রামের মীর হোসেনের ছেলে রকিবুল ইসলাম (৩০)। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৪ মে শাহাবুদ্দিন শেখ প্রতিদিনের মতো সকালে তাঁর অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় সুবচনী বাজার থেকে দুজন যাত্রী নিয়ে কুন্ডের বাজার এলাকার দিকে যান। এরপর দিন পেরিয়ে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হলেও শাহাবুদ্দিন সেদিন ঘরে ফেরেননি। খোঁজাখুঁজি করে না পাওয়ায় শাহাবুদ্দিনের বাবা আবুল শেখ পরদিন টঙ্গিবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
২৭ মে একই উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়নের কুড়মিরা গ্রামের একটি জঙ্গলের মধ্যে শাহাবুদ্দিনের গলাকাটা লাশ পান স্বজন ও স্থানীয় মানুষেরা। পরদিন আবুল শেখ বাদী হয়ে টঙ্গিবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঘটনায় সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইলিয়াস হোসেন, রকিবুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলার আলীগঞ্জ এলাকার মতিন শেখের ছেলে কবির হোসেন ও মুন্সিগঞ্জ সদরের মুক্তারপুর এলাকার ইব্রাহিম মাতবরের ছেলে রাকিব মাতবরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম বলেন, আদালতে জিজ্ঞাসাবাদে ইলিয়াস হোসেন, রকিবুল ইসলাম অটোরিকশা ছিনতাই করতে শাহাবুদ্দিনকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আদালত দুজনকে একটি ধারায় মৃত্যুদণ্ড, আরেকটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। কবির হোসেন ও রাকিব মাতবর ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকায় তাঁদের খালাস দিয়েছেন।
নিহত শাহাবুদ্দিনের বাবা আবুল শেখ ছেলে হত্যার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আসামিদের ফাঁসির আদেশে আমরা খুশি। আমরা চাই, সরকার যেন দ্রুত রায়টি কার্যকর করে।’