সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে নির্বাচন–পরবর্তী সংঘর্ষে আহত ২০
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক ও দোয়ারাবাজার) আসনের বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরে এ সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় দুজন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে ৯ জনকে আটক করেছে।
এ আসনে ২৭ হাজার ৫১৫ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী মুহিবুর রহমান মানিক। তিনি ১ লাখ ১৯ হাজার ৪০৩ ভোট পেয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুহিবুর এ নিয়ে টানা চতুর্থবার এবং সব মিলিয়ে পঞ্চমবার এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আহমদ চৌধুরী ৯১ হাজার ৮৮৮ ভোট পেয়েছেন। শামীম জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বড় ভাই আবুল কালাম চৌধুরী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ছাতক পৌরসভার টানা তিনবারের মেয়র।
এই আসনে মুহিবুর রহমান মানিক ও শামীম আহমদ চৌধুরীর পরিবারের রাজনৈতিক বিরোধ বহু পুরোনো। এখানে আওয়ামী লীগের রাজনীতি এ দুই পরিবারকে ঘিরেই বিভক্ত।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ভোট গ্রহণের দিন নৌকার প্রার্থীর কর্মী জেলা পরিষদের সদস্য আবদুল খালেক ও ঈগলের প্রার্থীর কর্মী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আমরু মিয়ার লোকজন উপজেলা সদরের মডেল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষে জড়ান। এতে কয়েকজন আহত হন। ওই ঘটনার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। এর জেরে আজ দুপুরে উপজেলা সদরে বাসায় যাওয়ার সময় আবদুল খালেকের ছেলে আবুল মিয়ার ওপর হামলা চালান আমরু মিয়ার লোকজন। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আবুল মিয়া (৩৬), আশিক মিয়া (৪২), মাসুদ রানা (২৫), জাবেদ আহমদ (২৩) ও গিয়াস উদ্দিনকে (৩০) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আশিক মিয়া দৈনিক আমাদের সময়ের উপজেলা প্রতিনিধি এবং মাসুদ রানা দৈনিক সংগ্রামের উপজেলা প্রতিনিধি। মাসুদ রানার অভিযোগ, তিনি ভিডিও ধারণের সময় পুলিশ তাঁদের লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং মুঠোফোন ভেঙে ফেলে।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস জানান, দোয়ারাবাজারে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পুলিশ ৯ জনকে আটক করেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে।