সাভারে জাতীয় নাগরিক কমিটির এক প্রতিনিধিকে তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

জাতীয় নাগরিক কমিটির এক প্রতিনিধিকে তুলে নিয়ে যাওয়া ও অপর এক প্রতিনিধিকে হয়রানির ঘটনায় মশালমিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি সাভার থানা শাখা। আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সাভারের শহীদ ইয়ামিন চত্বর এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার সাভারে গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে জাতীয় নাগরিক কমিটির সাভার থানা শাখার এক প্রতিনিধিকে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং অপর এক প্রতিনিধিকে হয়রানির ঘটনায় বিক্ষোভ করছে জাতীয় নাগরিক কমিটি সাভার থানা শাখা। আজ শনিবার সন্ধ্যায় এ কর্মসূচি পালন করে তারা।

আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ডের অদূরে শহীদ ইয়ামিন চত্বরে জড়ো হন জাতীয় নাগরিক কমিটি সাভার ও আশুলিয়া থানা শাখার প্রতিনিধিরা। এ সময় তাঁদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। পরে তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে সেখান থেকে মশালমিছিল বের করেন তাঁরা। মিছিলটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচামুখী লেন দিয়ে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

বক্তারা বলেন, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে সাভারের তেঁতুলঝোড়া এলাকায় নিজ বাসা থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির সাভার থানা প্রতিনিধি জুলকারনাইনকে তুলে নিয়ে যায় যৌথ বাহিনী। আজ সকালে তাঁকে সাভার মডেল থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া সাভার বাজার রোডে অপর এক প্রতিনিধি সেজুতি হোসাইনের বাসায় গিয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা কয়েক দফায় বাসার সামনে গিয়ে পরিচয় না দিয়ে দরজা খোলার নির্দেশ দিয়ে হয়রানি করেছেন।

জুলকারনাইন বলেন, ‘গতকাল রাতে (শুক্রবার দিবাগত রাত) আমাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। আমরা এ দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন, অধিকারের জন্য আন্দোলন করি। কেন আমাকে রাতের আঁধারে নিয়ে যাওয়া হলো। আমাকে ডাকলেই আমি তাদের ডাকে সাড়া দিতাম। আমাকে কিছু শারীরিক নির্যাতনও করা হয়।’

সেজুতি হোসাইন বলেন, ‘সকালে দুজন অপরিচিত লোক বাসার সামনে গিয়ে দরজা খুলতে বলেন। তাঁদের চিনতে না পারায় দরজা খুলিনি। বারবার লোক পরিবর্তন হচ্ছিল। কখনো দুজন, কখনো একজন, এভাবে তিনবার আসেন তাঁরা। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত তাঁরা আসতে থাকেন। তাঁরা শুধু দরজা খোলার নির্দেশ দেন; কিন্তু পরিচয় জানতে চাইলে পরিচয় দেননি। ওনারা সিভিল পোশাকে ছিলেন। ওনারা কারা আমি জানি না।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যাঁরা জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের ট্রাইব্যুনালে বিচারের আওতায় এনে গ্রেপ্তার করা হোক। আমরা দেখছি, পুরোনো ফ্যাসিস্ট কায়দায় এখন ছাত্র–জনতা স্থানীয় সমস্যা সমাধানে কোনো আন্দোলন–সংগ্রামে অংশ নিলে আন্দোলনকারীদের রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘যৌথ বাহিনী জুলকারনাইনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমাদের কাছে দিয়েছিল। পরে তাঁকে বেলা ১১টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’