পঞ্চগড়ে শীত জেঁকে বসছে, ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে জনপদ
হেমন্তের শেষ দিকে এসে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে প্রায় জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে চারদিক। উত্তরের হিমেল বাতাসে রাতে বাড়ছে শীতের অনুভূতি। ঘন কুয়াশার কারণে সকালে সড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গত ১০ দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে তা সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নয়। আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে। সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ৬ থেকে ৮ কিলোমিটার।
এর আগে ২৯ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা ১০ দিন তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় তেঁতুলিয়া দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করেছে। তবে এই সময়ের মধ্যে বেশির ভাগ দিনই কুয়াশা না থাকায় সকাল সকাল উঠেছিল ঝলমলে রোদ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই উত্তরের এই জনপদে বাড়তে থাকে শীত। রাত বাড়ার সঙ্গে বাড়তে থাকে কুয়াশার দাপট। রাতভর টিপটিপ বৃষ্টির মতো ঝড়ে কুয়াশা। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ঝরছিল।
পঞ্চগড় পৌরসভার তুলার ডাঙ্গা এলাকায় জমিতে আজ সকালে হালচাষ করছিলেন মো. শাহাজ উদ্দিন (৪৬) নামের এক কৃষক। তিনি বলেন, কয়েক দিন ধরে ঠান্ডা বাতাস ছিল। কিন্তু বাতাসের সঙ্গে রোদ ছিল। এ জন্য শীতটা কম মনে হয়েছে। তবে আজ সকাল থেকে কুয়াশায় ১০ হাত দূরেও দেখা যায় না। কুয়াশার কারণে আজকে বেশি শীত লাগছে।
সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশায় ভিজে গেছে পিচঢালা পথ। গাছের পাতা, ফসলের খেত আর ঘাসের ওপর থেকে ঝরছে শিশির বিন্দু। ঘন কুয়াশার কারণে সকাল বেলা সড়কের যানবাহনগুলো চলেছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। ঘন কুয়াশার মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কর্মজীবী মানুষ ছুটছে কাজের সন্ধানে। কেউ সবজি খেতে সংগ্রহ করছেন সবজি, কেউ বা তা ভ্যানে করে বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছেন বাজারে। আবার কেউবা হালচাষ করছেন কৃষিজমিতে।
সকালে গ্রাম থেকে পঞ্চগড় শহরে আসা হাফিজ উদ্দিন (৭০) নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আইজকা খুপে ঠান্ডা বাপু। ফজর তকা এনং ঠান্ডা। কুহাখানোত (কুয়াশায়) কিছু দেখা যায় না। দেখোনা গাড়িলা দিনোতো বাতি জ্বালায় চালাছে।’
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিনের তুলানায় আজ তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে চারদিক। ঘন কুয়াশায় সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে আসতে না পারায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। এ জন্য প্রায় সারা দিনই শীত অনুভূত হবে। এ ছাড়া এখন থেকে তেঁতুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিন দিন কমতে থাকবে। সেই সঙ্গে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে এই এলাকায় একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।