তৃণমূল বিএনপি মহাসচিব তৈমুর আলম বললেন, গণগ্রেপ্তার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বাধা হবে
গণগ্রেপ্তার বন্ধ না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বাধা হবে বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তাঁর স্ত্রী হালিমা ফারজানা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
তৈমুর আলম বলেন, ‘বিএনপি যারা করে, তারা সবাই গাড়ি জ্বালায় না। যারা বিএনপি করছে, তারা কেউ বাড়িতে থাকতে পারছে না। আমি শুনেছি, রূপগঞ্জে এমপি সাহেব যে লিস্ট দেন সেই তালিকা অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এখানেও তালিকা করা হচ্ছে। তাদের কেউ বাড়িতে থাকতে পারে না। প্রশাসনকে অনুরোধ করব, যারা গাড়িতে আগুন দেয় না, তাদের বাড়িতে থাকতে দিন। গণগ্রেপ্তার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বাধার কারণ হতে পারে। আমরা সব মানুষের অংশগ্রহণ চাই। সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ চাই।’
নারায়ণগঞ্জের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তৈমুর আলম খন্দকার। এ সময় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে দেশটাকে রক্ষা করতে চাই। দেশে একটা সংকট মুহূর্ত চলছে। এই সংকটকে কাটিয়ে উঠতে হবে। বিএনপি আমাকে প্রয়োজন মনে করে নাই, অনেক লাঞ্ছিত করেছে, অত্যাচার-নির্যাতন করে আমাকে দল থেকে বিতাড়িত করেছে। তবে একটি রাজনৈতিক দলের মহাসচিব হয়ে জাতির জন্য কথা বলতে আল্লাহ আমাকে সুযোগ দিয়েছে। আমি আমার নৈতিকতা, সততা, নিষ্ঠা দিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এবার কমিটমেন্ট দিয়েছেন নির্বাচন তিনি সুষ্ঠু করবেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর কমিটমেন্ট রক্ষা করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি যদি এটা রক্ষা করতে না পারেন, তাহলে যে সংকট হবে, সেই সংকটের প্রধান ভিকটিম হবেন প্রধানমন্ত্রী। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এবারের নির্বাচন ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো হবে না। মানুষ সুষ্ঠুভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁর ভোটটি দিতে পারবেন—এটা আমাদের প্রত্যাশা ও প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্ট।’
আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তৈমুর আলম বলেন, ‘আমি জীবনভর হেভিওয়েটদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এখনো লড়াই করব। আমি মজলুমদের রাজনীতি করি। হেভিওয়েটরা সব সময় মজলুমদের নির্যাতন করে। রূপগঞ্জে আজ আওয়ামী লীগের লোকজনও থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগের লোকজনেরও জমি দখল হয়ে গেছে। পিএস-এপিএস রূপগঞ্জ শাসন করে। আমি অতীতেও পিএস রাখিনি, ভবিষ্যতেও রাখব না। আমি থানার দালাল সৃষ্টি করি নাই, ভবিষ্যতেও করব না। আমি প্রত্যেক এলাকায় পঞ্চায়েত করব, পঞ্চায়েত কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।’ তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের কাউকে রূপগঞ্জ শাসন করার অধিকার দেব না।’
নির্বাচন নিয়ে কোনো চাপ আছে কি না, প্রশ্নে তৈমুর বলেন, ‘চাপ নামের কোনো শব্দ বিষয় নয়। আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করলে চাপ বলে কিছু না। আমি মহাজোটে যাব না। আমি সরকারের মার্কা নিয়ে নির্বাচন করব না। আমার দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করব। জনগণ যদি মনে করেন, তাহলে আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। না হলে তাঁরা প্রত্যাখ্যান করবেন।’
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই আসনে গোলাম দস্তগীর গাজী, তৈমুর আলম খন্দকার, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী শহীদুল ইসলাম, জাকের পার্টির প্রার্থী যোবায়ের আলম, স্বতন্ত্র চার প্রার্থীসহ মোট আটজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আজকে পর্যন্ত গোলাম দস্তগীর গাজী ও তৈমুর আলম খন্দকার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।