আশুলিয়ায় কেব্ল টিভির ব্যবসা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা, তিনজন গুলিবিদ্ধ
ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় কেব্ল টিভির (ডিশ) ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে এক পক্ষের ছোড়া গুলিতে অপর পক্ষের তিনজন আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ তিনজনকে সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ তিনজন হলেন কাঠগড়া এলাকার মোতালেব সরকারের ছেলে মানিক সরকার (৫০), ইয়াকুব আলী সরকারের ছেলে সাইদুর সরকার (৩৮) এবং মহিউদ্দিন সরকারের ছেলে শরীফ সরকার (৩৬)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কাঠগড়া এলাকায় কেব্ল টিভির ব্যবসা করে আসছেন মানিক সরকার। সম্প্রতি অপর কেব্ল টিভির ব্যবসায়ী অশ্রু এবং তাঁর লোকজন মানিক সরকারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে অশ্রুর কাছে মানিক সরকার অভিযোগ করেন, অশ্রুকে দেখা করতে বলেন। অশ্রু নিজে এসে দেখা করতে অপারগতা প্রকাশ করে কাঠগড়া বাজারে তাঁর কার্যালয়ে মানিক সরকারকে দেখা করতে বলেন।
আহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, সন্ধ্যার দিকে মানিক সরকারসহ বেশ কয়েকজন কাঠগড়া বাজার এলাকায় অশ্রুর কার্যালয়ের সামনে যান। মানিক সরকার কেব্ল লাইন কেটে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে অশ্রুকে জিজ্ঞেস করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে অশ্রুসহ কয়েকজন আগ্নেয়াস্ত্র বের করে মানিক সরকার ও তাঁর লোকজনকে লক্ষ্য করে কয়েকটি গুলি ছোড়েন। এতে মানিক সরকারসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।
আহত মানিক সরকার বলেন, ‘অশ্রুর অফিসের সামনে মাগরিবের আজানের পরপরই মুরুব্বিদের নিয়ে আমাদের ডিশের (কেব্ল টিভির) লাইন কেটে দেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে যাই। এ সময় অশ্রু, মো. মাসুম, মো. সালমান ও আবু বক্করের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হুট করে ওরা আমাদের গুলি করে। আমার নিতম্বে লাগা গুলিটি সম্ভবত লেগে বের হয়ে গেছে বুঝতে পারছি না। সাইদুর সরকারের কোমরে আর শরীফ সরকারের পায়ে গুলি লাগছে।’
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অশ্রু চার-পাঁচ বছর আগে সাভারের খাগান এলাকায় সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী হত্যা মামলার আসামি। তিনি এখন জামিনে রয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে অশ্রুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন মো. মাসুম ও মো. সালমান। সালমান বলেন, ‘গোলাগুলির ঘটনায় অযথাই উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়াচ্ছে। আমি ঘটনাস্থলে ছিলামই না।’
বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসান মাহবুব বলেন, গুলিবিদ্ধ তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এঁদের মধ্যে একজনের কোমরে ও বাকি দুজনের পায়ে গুলি লেগেছে। তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক, উত্তর বিভাগ) মো. আবদুল্লাহিল কাফী বলেন, কেব্ল টিভির ব্যবসা কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটেছে বলে তিনি শুনেছেন। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় যাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে, সে অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।