কুমিল্লায় বই বিক্রেতাকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড, স্বামীর সাত বছরের কারাদণ্ড
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় বই ও কসমেটিকস বিক্রেতা এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে হাফেজা বেগম (২৮) নামের এক গৃহবধূকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ওই গৃহবধূর স্বামীকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া হাফেজা বেগম ওরফে তাসমিহা বরুড়া উপজেলার বড় লক্ষ্মীপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে এবং সাত বছরের কারাদণ্ড পাওয়া শাহীন ভূঁইয়ার স্ত্রী। শাহীন একই গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মো. নূরুল ইসলাম ও আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. ফারুক আহমেদ রায়ের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পূর্বশত্রুতার জেরে ২০১৬ সালের ৯ থেকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে লাকড়ি দিয়ে পিটিয়ে আক্তারুজ্জামান নামের ওই বই বিক্রেতাকে হত্যা করেন। আসামিরা লাশ পুকুরের পানিতে ফেলে গুম করে রাখেন। নিহত আক্তারুজ্জামান একই গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে।
এ ঘটনায় ১১ অক্টোবর নিহত ব্যক্তির বড় ভাই আবুল কাশেম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোজাম্মেল হক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি হাফেজা বেগম ও তাঁর স্বামী শাহীন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন। পরে তাঁরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে ২০২১ সালের ২৩ জুন সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল আসামি হাফেজা বেগম, শাহীন ভূঁইয়া ও মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ আসামি হাফেজা বেগমকে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড ও শাহীন ভূঁইয়াকে ২০১ ধারায় ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এ ছাড়া আসামি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।