চাঁদপুরে থানায় ঢুকে এসআইকে মারধরের প্রতিবাদে পুলিশ সদস্যদের কর্মবিরতি

চাঁদপুর মডেল থানা–পুলিশের সদস্যরা গতকাল মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন করেনছবি: প্রথম আলো

চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া রোডে দুই পক্ষের জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাঁদপুর মডেল থানায় ঢুকে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল সামাদকে (৫২) মারধরের প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মডেল থানাটির পুলিশ সদস্যরা এ কর্মবিরতি পালন করেন।

গত সোমবার এসআই আবদুল সামাদকে মারধরের ঘটনা ঘটে। আর এ ঘটনায় মামলা না দেওয়ার জন্য একটি পক্ষের লোকজন গতকাল সকালে থানায় এসে হট্টগোল করেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়েন। আজ বুধবার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এসআই আবদুল সামাদ বাদী হয়ে আজ বুধবার থানায় মামলা করেন। মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি ৮০ থেকে ১০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া রোডের জমিসংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী মাসুমা বেগম চাঁদপুর মডেল থানায় গত রোববার একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে থানার এসআই আবদুল সামাদ সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় সেখানে স্থানীয় বিএনপির নেতা মোশারফ হাওলাদারের স্বজনদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেত্রী মাসুমা বেগমের লোকজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বিএনপি–সমর্থিত লোকজন লাঠিসোঁটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে মাসুমা বেগমের মেয়েকে হেনস্তা করেন। খবর পেয়ে মেয়েটির সহপাঠী ও শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে যান। এ সময় পুলিশের সামনেই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। পরে পুলিশ দুই পক্ষকে সরিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মাসুমা বেগমের পক্ষের লোকজন চাঁদপুর মডেল থানায় ঢুকে এসআই আবদুল সামাদকে টেনেহিঁচড়ে বের করে মারধর করেন। এতে আবদুল সামাদ আহত হন। পরে থানার ওসি আলমগীর হোসেন প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষুব্ধ লোকজনের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। এ ঘটনার জেরে গতকাল সকালে একই পক্ষের লোকজন থানায় এসে হট্টগোল করেন। এ সময় ওসি আলমগীর হোসেন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহত এসআই আবদুল সামাদকে একই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে আজ ওসি আলমগীর হোসেনকে ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।