বাঘাইছড়ির বাঘাইহাট এখনো থমথমে, বাজারে যাচ্ছেন না পাহাড়িরা
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট বাজারে আঞ্চলিক দল ও গ্রামবাসীর সংঘর্ষের পর এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনার পর পাহাড়িরা বাজারে যাচ্ছেন না। গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) ও গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শান্তি পরিবহনের চালকের সহকারী মো. নাঈম।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গঙ্গারাম বাজার এলাকায় আজ বুধবার সকালে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল দুপুরে দুটি আঞ্চলিক দলের কর্মীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হয়। এরপর আজ সকাল থেকে বাঘাইহাট বাজারে কিছু দোকান খুললেও কোনো পাহাড়ি ক্রেতা আসেননি। বাঘাইহাট বাজার থেকে তিন কিলোমিটার দূরে গঙ্গারাম মূল এলাকায় উজো বাজারে আজ হাটের দিন। কিন্তু সংঘর্ষের ঘটনার কারণে বাজার মিলছে না। সেখানে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ছয় থেকে আট শ গ্রামবাসী মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে সাজেক ইউনিয়নে বাঘাইহাট বাজারে জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের ৩০ থেকে ৪০ জন অবস্থান করছেন। কয়েক দিন ধরে দুই দলের কর্মীরা বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও হয়রানি করছিলেন বলে অভিযোগ আছে। গতকাল সকালে সাত শতাধিক গ্রামবাসী বাঘাইহাট বাজারে এসে অবস্থান নেন। পরে জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের সদস্যদের খুঁজতে থাকেন তাঁরা।
একপর্যায়ে আঞ্চলিক দলের কর্মীদের ধাওয়া দেয় জনতা। এ সময় স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে জনতাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়। একপর্যায়ে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে শান্তি পরিবহনের চালকের সহকারী মো. নাঈম (৩৫) মারা যান। তাঁকে উদ্ধার করে দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হন। তাঁরা হলেন দুলেই চাকমা (২৫), চিক্কো মনি চাকমা (৩০) ও সোনামনি চাকমা (২৮)।
বাঘাইহাট বাজারের ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর বাজারের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আজ সকালে কিছু দোকান খুললেও কোনো পাহাড়ি বাজারে আসেননি।
সাজেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তিকে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।