ফরিদপুরের এসপিকে নিয়ে কাজী জাফর ও নিক্সনের কথার লড়াই
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহানের ভূমিকা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। গতকাল রোববার দুজনই নিজেদের নির্বাচনী সভায় এসপি, পুলিশ ও প্রশাসন নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থান তুলে ধরেন।
কাজী জাফর উল্যাহ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। নিক্সন চৌধুরী আওয়ামী যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তৃতীয়বারের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
কাজী জাফর উল্যাহ গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদরপুর স্টেডিয়ামে এক নির্বাচনী সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, এসপি নিক্সনের পক্ষে। এসপির সঙ্গে ওসি যাঁরা আছে, তাঁরা স্বাভাবিকভাবে নিক্সনের পক্ষে। এসপি চায় না যে এখানে নৌকা নির্বাচিত হোক। ‘টাকা আছে যেখানে, প্রশাসন-এসপি আছে সেখানে’ মন্তব্য করে কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘যুদ্ধ-লড়াই করে আমরা মাঠে আছি।’
একই দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে নিক্সন চৌধুরী ভাঙ্গার আলগী ইউনিয়নের বরদিয়া বাজারে এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেন। ওই সভায় এসপি ও প্রশাসনকে নিয়ে কাজী জাফর উল্যাহর বক্তব্যের পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন নিক্সন চৌধুরী। কাজী জাফর উল্যাহর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি ১০ দিন পর এলাকায় আসবেন। আইসা উনি প্রথমেই এক মিটিংয়ে বললেন, এসপি তাঁর কথা শোনে না। এসপি নৌকার বিপক্ষের লোক। তারপরে বললেন, ওসি তাঁর কথা শোনে না। ওসি নৌকার বিপক্ষের লোক।’
নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমি ওনাকে (কাজী জাফর উল্যাহ) বলব, আপনি কে? আপনি আওয়ামী লীগের কো-চেয়ারম্যান। আপনি যদি পুলিশ-প্রশাসনকে বিতর্কিত করেন, তাহলে সরকার বিতর্কিত হয়, প্রধানমন্ত্রী বিতর্কিত হন।’ ‘আপনার পরাজয় হবে আপনার নিজের কারণে’ মন্তব্য করে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আপনি কেন প্রশাসন-ডিসি-এসপি-ওসিকে দোষ দিচ্ছেন? কী করবে পুলিশ? পুলিশ আপনার জন্য ভোট কেটে দেবে, এটা আপনি আশা করেন? এই নির্বাচন, সেই নির্বাচন না। আপনি যদি মনে করেন, আপনি অনেক বড় হেভিওয়েট নেতা, আপনি যা চাবেন, পুলিশ তা–ই করবে, এটা তো ভুল।’
এদিকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের (এসপি) বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল ইসির উপসচিব মো. মিজানুর রহমানের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো হয়।