সাভারে সিআরপি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের ৩ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ
ঢাকার সাভারে বাসের ধাক্কায় পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রের (সিআরপি) নার্সিং কলেজের এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারসহ ৬ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সাভারের শিমুলতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। পরে দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে সিআরপি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী প্রত্যয় হত্যার দায়ভার ঠিকানা পরিবহনকে নিতে হবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ী ওই বাসচালক ও তাঁর সহকারীকে গ্রেপ্তার করতে হবে; সাভারে পরিবহন ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা; প্রত্যয়ের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণসহ তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া; বেপরোয়া গতিতে বাস চালানো ও ওভারটেকিং বন্ধ করা; যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করা এবং সাভারে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দেওয়া।
সিআরপি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, গত শনিবার সকালে সিআরপি নার্সিং কলেজের ডিপ্লোমা ইন নার্সিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী প্রত্যয় সরকার সাইকেল চালিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাকিজা এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে ঠিকানা পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দিলে প্রত্যয় সড়কে ছিটকে পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান প্রত্যয় সরকার।
প্রত্যয় সরকার নিহত হওয়ার ঘটনার ৬ দফা দাবিতে আজ দুপুর ১২টার দিকে সাভারের শিমুলতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। সড়ক অবরোধ করায় এ মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন এ সড়ক ব্যবহারকারীরা। বেলা তিনটার দিকে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে দিয়ে দাবির বিষয়ে আগামী রোববার আলোচনা করে সমাধান করার আশ্বাস দিলে সড়ক থেকে সরে যান শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গতকাল রোববার প্রত্যয়ের নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে একই এলাকায় মহাসড়কের এক পাশে মানববন্ধন করেছিলেন সিআরপি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন। পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে সড়ক ছেড়ে দিয়েছিলেন।
সিআরপি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী কানিজ রুকাইয়া বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল আমাদের ছোট ভাইকে যে বাসচালক ও তাঁর সহকারী হত্যা করেছেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রত্যয়ের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এ ছাড়া আরও কিছু দাবি ছিল। ঠিকানা পরিবহনের মালিকপক্ষ গতকাল (রোববার) বলেছিল, দাবি পূরণ করা হবে। কিন্তু আজ সকাল ১০টার দিকে তারা জানিয়ে দেয়, দাবি পূরণ করবে না। তাই আমরা সড়ক অবরোধ করেছি।’
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সওগাতুল আলম বলেন, সিআরপির নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টার দিকে বেশ কয়েকটি দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছিলেন। বেলা ২টা ৪০ মিনিটের দিকে তাঁরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছেন।