শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন প্রত্যাহার করা কৃষক দল নেতা সংগঠন থেকে বহিষ্কার
ময়মনসিংহের আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করার পর প্রত্যাহার করে নেওয়ায় উত্তর জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব শাহ মুহাম্মদ আলীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কৃষক দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুষ্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব শাহ মুহাম্মদ আলীকে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সব পর্যায়ের নেতা–কর্মীকে তাঁর সঙ্গে সাংগঠনিক কোনো সম্পর্ক না রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তর জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আবুল বাশার আকন্দ। তিনি বলেন, দলের সঙ্গে বেঈমানি করার কারণে তাঁকে (মুহাম্মদ) বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্তে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। কিন্তু ব্যক্তি সুবিধার জন্য তিনি মামলাটি প্রত্যাহার করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘মামলা আমি রেডি করে দিইনি। যেহেতু দলীয়ভাবে মামলা করা হয়, দল রেডি করে দিয়েছে।’
বহিষ্কৃত শাহ মুহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, মামলার আবেদন করলেও দলীয় কোনো নেতা দায়ভার নিতে চাচ্ছিলেন না। তাঁরা পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলেন। আদালতে মামলার আবেদন জমা দেওয়ার পরপরই বিএনপির অনেকে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে টাকা–পয়সার লেনদেন শুরু করেন। তিনি তাঁদের নাম বলতে চান না। মামলায় বিএনপির তিনজন সমর্থক ও একজন ব্যবসায়ীর নাম দেওয়া হয়েছে ব্যক্তি আক্রোশে। মামলা বাশার আকন্দ প্রস্তুত করেন। তিনি শুধু স্বাক্ষর করেন। তিনি বলেন, ‘নেতা–কর্মীদের আসামি দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে ২৫ তারিখ আমি মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করি। আমি দুর্দিনে দলের সঙ্গে ছিলাম। যখন কেউ দল করেনি, আমি করেছি। দলে আমার কিছু চাওয়া–পাওয়ার নেই। দুঃখজনক বিষয় হলো কেন্দ্র আমাকে ডাকেনি।’
গত ২০ জুলাই বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ফুলপুর পৌর শহরে সাইফুল ইসলাম (৩৭) নামের এক কৃষক ধান বিক্রি করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি রহিমগঞ্জ ইউনিয়ের চক ঢাকির কান্দা গ্রামের কৃষক তৈয়ব আলীর ছেলে। ওই ঘটনায় ২০ আগস্ট আদালতে মামলার আবেদন করেন শাহ মুহাম্মদ আলী। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। আদালত ওই ঘটনায় আগে মামলা হয়েছে কি না, জানতে চেয়ে পাঁচ দিন সময় দিয়ে ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। এর মধ্যে ২৫ আগস্ট বাদী আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করলে আদালত আবেদন আমলে নিয়ে মামলা প্রত্যাহার করেন।
অন্যদিকে কৃষক সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় ফুলপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেন মুন্না বাদী হয়ে গত ২৩ জুলাই অজ্ঞাতনামা পরিচয়ের ৫০ থেকে ৬০ জন দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।