পঞ্চগড়ে সাবেক রেলমন্ত্রীসহ ১৯ জনের নামে হত্যা ও গুমের মামলা
পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়া নিখোঁজ রিকশাচালক আল আমিনকে (২১) হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের ১৯ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আজ রোববার নিখোঁজ রিকশাচালক আল আমিনের বাবা মো. মনু বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় এই মামলা করেন। পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় সাবেক মন্ত্রী নূরুল ইসলাম, পঞ্চগড়-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া, পঞ্চগড়-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মজাহারুল হক প্রধান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ও পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল আলম, পঞ্চগড় পৌর যুবলীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর হাসনাত মো. হামিদুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মো. নোমান হাসান, সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিব পাটোয়ারী, পঞ্চগড় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আল তারিক, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উজ্জলসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিখোঁজ আল আমিন পঞ্চগড় পৌরসভার দরজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পেশায় একজন অটোরিকশাচালক। তাঁর চার বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে। আল আমিন পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে পঞ্চগড় জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন আল আমিন। দুপুরে দুই তরুণের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিব পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে তাঁকে আটক করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কয়েকজন। পরে আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। তারপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে ছাত্রলীগ নেতা সাদমান সাকিবের বাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আল আমিনের সঙ্গে থাকা রায়হানুল ইসলাম রিফাত ও সুজন ইসলাম নামের দুই তরুণ আহত হন। তবে তাঁদের দুজনকে স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করলেও আল আমিনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর পর থেকেই আল আমিনকে খুঁজছিল তাঁর পরিবার। খোঁজ না পেয়ে ১৪ আগস্ট পরিবারের পক্ষ থেকে পঞ্চগড় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। এদিকে আহত ওই দুই তরুণের মাধ্যমে এ ঘটনা জানতে পেরে নিখোঁজের তিন মাস পর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের আসামি করে মামলা করলেন আল আমিনের বাবা।