মারধর ও প্রাণনাশের অভিযোগে ঢাকায় জিডি হিরো আলমের
হামলা, মারধর ও প্রাণনাশের অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) হাতিরঝিল থানায় আজ বৃহস্পতিবার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম।
হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম আযম জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জিডিতে হিরো আলম উল্লেখ করেন, গতকাল বুধবার রাত দুইটার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে আসা ৬ জন অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্ত তাঁর হাতিরঝিল মহানগর প্রজেক্ট এলাকার ২ নম্বর রোডের ডি ব্লকের ১৭ নম্বর বাসায় হানা দেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাঁর কক্ষে ঢুকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং এলোপাতাড়ি লাথি মারেন। এ সময় তাঁরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে দ্রুত বাসা ত্যাগ করেন।
এর আগে হিরো আলম বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে বগুড়া থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। এতে বগুড়া আদালতের আইনজীবীদের ৮ জন সহকারীকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, হিরো আলম ২০১৮ ও ২০২৩ সালে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে জাতীয় সংসদ ও উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোট গ্রহণের দিন গত স্বৈরাচার সরকারের নির্দেশে যুবলীগের কর্মীরা কেন্দ্রে হিরো আলমকে মারধর ও হত্যার চেষ্টা করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ন্যায়বিচারের আশায় গত রোববার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সদ্য সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আওয়াল এবং সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে মামলা করতে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (নন্দীগ্রাম আমলি আদালত) আদালতে যান হিরো আলম। মামলা দায়ের শেষে এজলাস কক্ষের ফটকে হামলার শিকার হন তিনি। আদালত প্রাঙ্গণে থাকা বহু মানুষের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ তাঁকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি। হামলাকারীরা তাঁকে আদালত প্রাঙ্গণে এনে লাথি মারেন। এ সময় কান ধরে ওঠবস করানো হয়। হামলাকারীদের মধ্যে আবু হাসান সরকার হত্যার উদ্দেশ্যে হিরো আলমের মাথা ও বুকে ঘুষি মারেন এবং গলা টিপে ধরেন। নাজমুল হত্যার উদ্দেশে তাঁর পেটে ও পিঠে লাথি মারেন। পরে স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
তবে ওই হামলার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে হিরো আলম বলেছিলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে কটূক্তি এবং দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে মামলা করার অভিযোগ তুলে বিএনপির লোকজন এ হামলা করেছেন।
তবে বগুড়া জেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে হিরো আলমের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে নেতারা বলছেন, হামলাকারীরা বিএনপির কেউ নন। কোনো প্রমাণ ছাড়াই হিরো আলম বিএনপিকে দোষারোপ করছেন। প্রমাণে ব্যর্থ হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক দিন পর হিরো আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুই দলের লোকজনই তাঁর ওপর হামলা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার মোট ১১২টি কেন্দ্রে মোট বৈধ ভোট পড়েছে ৭৮ হাজার ৫২৪ ভোট। এর মধ্যে ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন (মশাল)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আশরাফুল হোসেন (একতারা) পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট।