রাত নামলেই কাটা হচ্ছে সরকারি টিলা, তৈরি হবে বসতঘর
প্রায় ২০ ফুট উঁচু একটি টিলা। গাছ, গুল্ম ও বিভিন্ন বনজ উদ্ভিদে ভরা চারিদিক। একদিকে কাটা পড়েছে বেশ কিছু গাছ। সেখান থেকে মাটিও কাটা হয়েছে। তবে কেটে নেওয়া মাটি আশপাশে পড়ে নেই কোথাও।
গত রোববার সকালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের সোনাইর বরপাড়া এলাকায় গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। এক্সকাভেটর (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে সরকারি টিলাটির গা থেকে। সেসব মাটি ট্রাকে অন্যত্র সরিয়ে বিক্রি করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। গত নভেম্বর থেকে চলছে টিলা কাটার এই কাজ।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারি টিলাটি আবদু রশিদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির দখলে আছে। টিলাটির পূর্ব ও পশ্চিম পাশে সরকারি জায়গায় আবদু রশিদের একটি টিনের এবং একটি সেমি পাকা বাড়ি রয়েছে। নতুন করে আরেকটি পাকা বাড়ি বানানোর জন্য অন্য একজনকে দিয়ে টিলাটি কাটাচ্ছেন তিনি। যিনি টিলা কেটে মাটি বিক্রি করছেন, তাঁর নামও আবদু রশিদ।
বসতবাড়ির আঙিনায় কথা হয় আবদু রশিদের (টিলাটি যার দখলে) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি রশিদকে টিলাটি কেটে সমান করার জন্য বলেছি। ১৫ দিন আগে টানা কয়েক দিন তিনি রাতে মাটি কেটে বিক্রি করেছেন। মাটি বিক্রির টাকা আমরা নিই না। বর্তমানে তিনি মাটি কাটা বন্ধ রেখেছেন। কোথাও জায়গা ভরাটের অর্ডার পেলে আবার কাটবেন।’
তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টিলা কাটার বিষয়টি অস্বীকার করেন আবদু রশিদ (যিনি মাটি বিক্রি করছেন)।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে দরবেশ হাট সড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে পুটিবিলা এম চর হাটবাজার। সেখান থেকে আরও দুই কিলোমিটার পূর্বে লাকড়িপাড়া এলাকা। তারপর আবার দক্ষিণ দিকে দেড় কিলোমিটার গেলেই টিলাটি দেখা যায়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক মো. মোজাহিদুর রহমান বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইনামুল হাছান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। সরকারি টিলা কাটায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।’