হবিগঞ্জে ‘কিংস পার্টি’র পাঁচ প্রার্থীর তিনজনই আওয়ামী লীগের নেতা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জের চারটি আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র মিলে ৪০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিত বিএনএম ও তৃণমূল বিএনপির পাঁচজন প্রার্থীর তিনজনই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, একজন জাতীয় পার্টির এবং অপর একজনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি, তিনি এলাকায় অপরিচিত।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১১ জন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে প্রার্থী হয়েছেন এস এ এম সোহাগ। তিনি বানিয়াচং উপজেলার লামাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। সোহাগ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন। সবশেষ তিনি বানিয়াচং উপজেলা কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
নিজ দল ছেড়ে বিএনএমের প্রার্থীর হওয়ার বিষয়ে এস এ এম সোহাগ প্রথম আলোকে বলেন, দেশের বর্তমান রাজনীতি নতুন মোড় নিয়েছে। এ কারণে নতুনের সঙ্গে আছেন তিনি।
এ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন খায়রুল আলম। তিনি বলেন, দলের সিদ্ধান্তে তিনি এখানে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আইতন গ্রামে। তিনি চুনারুঘাট উপজেলা যুবলীগের সদস্য। এখানে তৃণমূল বিএনপির অপর প্রার্থী হয়েছেন সাদিকুর মিয়া তালকদার। তিনি বানিয়াচং উপজেলার পৈলারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ও জাতীয় পার্টি হবিগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
জাতীয় পার্টি ছেড়ে তৃণমূলে আসার বিষয়ে সাদিকুর বলেন, ‘এলাকায় এলেই মানুষ আমার কাছে জানতে চায়, আমি জাতীয় পার্টি কোনো অংশের সঙ্গে যুক্ত। কাদের না রওশন এরশাদ? এর উত্তর দিতে দিতে আমি বিরক্ত। তাই এ দল ছেড়ে নতুন দলে যোগদান করেছি।’
হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১১ জন। তাঁর মধ্যে বদরুল আলম সিদ্দীকী বিএনএমের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। মনোনয়নপত্রে তাঁর ঠিকানা—ঢাকার পশ্চিম উত্তরা, সড়ক নম্বর ১৭, বাড়ি নম্বর ১১। তিনি মনোনয়নপত্রে যে ফোন নম্বর ব্যবহার করেছেন। সেই নম্বর ফোন করা হলে কেউ ধরেননি।
হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে মোট প্রার্থী ১০ জন। তাঁদের মধ্যে বিএনএমের মো. মোখলেছুর রহমান মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। পেশায় ঠিকাদার।
বিএনএমের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমি ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সবশেষ জগদীশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। গত ১০ বছরে মনে হয়েছে, আওয়ামী লীগের কর্মীরা নিজেরাই দল করে পেট পালতে পারে না। তাই এ দল ছেড়ে নতুন করে নিজেকে জড়িত করেছি, দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এ চিন্তা থেকেই আমি প্রার্থী হয়েছি।’