ঝিনাইদহ ভেটেরিনারি কলেজের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় এবার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরানসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় আল ইমরানের অনুসারী অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহত শিক্ষার্থীদের একজন সাইফুজ্জামান মুরাদের বাবা বদিউজ্জামান বিশ্বাস বাদী হয়ে আজ বুধবার ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে ৩০২/৩৪ ধারায় এ মামলা করেন। আদালতের বিচারক মামলা তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
৭ অক্টোবর ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের জোহান পার্কের সামনে ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের ৯ কর্মীর ওপর প্রতিপক্ষরা হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ছাত্রলীগের কর্মী সজীবুল হাসান ও নুর ইসলাম গুরুতর আহত হন। তাড়া খেয়ে পালানোর সময় সাইফুজ্জামান মুরাদ, তৌহিদুল ইসলাম ও সমরেশ বিশ্বাস রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
মামলার আরজিতে বলঅ হয়, আসামিরা ঘটনাটি দুর্ঘটনা বলে চালানোর জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়ানো পল্লী বিদ্যুতের খুঁটিবোঝাই ট্রাকের বিভিন্ন স্থানে রক্ত মাখান এবং মুরাদের মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেন।
অবশ্য নিহত মুরাদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ওই শিক্ষার্থীদের কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডটি সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে চালানোর জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বিদ্যুতের খুঁটিবোঝাই ট্রাকে রক্ত মাখানো হয়েছে। ওই দিনের ঘটনায় ইতিপূর্বে ঝিনাইদহ সদর থানায় মারামারির অভিযোগে মামলা হয়েছে। প্রতিপক্ষের হামলায় আহত সজীবুল হাসান বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলার দুই আসামিকে ইতিমধ্যে র্যাব আটক করেছে।
আজ আদালতে দায়ের করা মামলায় বাদী তাঁর আরজিতে উল্লেখ করেছেন, ভেটেরিনারি কলেজে ছাত্ররা তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছেন। এই আন্দোলনে তাঁর ছেলেসহ অন্যরা নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। আসামিরা তাঁর ছেলে সাইফুজ্জামান মুরাদের ঘাড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ঘাড়ের অর্ধেকটা কেটে দেন। আসামিরা তাঁর পিঠেও কয়েকটি কোপ দিয়ে রক্তাক্ত করেন। তাঁর মাথার মাঝেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়া তৌহিদুল ইসলামের একটি হাত ও একটি পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। সমরেশ বিশ্বাসের একটি পা, একটি হাত ও ঘাড়ের কিছু অংশ কেটে দেওয়া হয়। এরপর আসামিরা ঘটনাটি দুর্ঘটনা বলে চালানোর জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়ানো পল্লী বিদ্যুতের খুঁটিবোঝাই ট্রাকের বিভিন্ন স্থানে রক্ত মাখান এবং মুরাদের মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান বলেন, ‘প্রথমে থানায় যে মামলা হয়েছে সেখানে আমার নাম নেই। পরে আদালতে মামলা হয়েছে শুনেছি। যদি হয়ে থাকে তাহলে এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ষড়যন্ত্র।’