রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলি

রাউজান উপজেলার মানচিত্রছবি: গুগল ম্যাপ থেকে

চট্টগ্রামের রাউজানে সৌদিপ্রবাসী এক বিএনপি নেতাকে অপহরণের পরে মারধর, মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, গোলাগুলি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের গরীব উল্লাহপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।

অপহৃত প্রবাসী হুমায়ুন কবির বিএনপির কেন্দ্রীয় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী যুবদল নেতা আরাফাত মামুন ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে হুমায়ুনকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ করা হয়।

এ ঘটনার জেরে গিয়াস কাদের ও গোলাম আকবরের অনুসারীদের মধ্যে গোলাগুলি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। উদ্ধার হওয়া প্রবাসী বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। আহত দুই নেতার অনুসারী কয়েকজনও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দুপুরে পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের ইসলাম নগর গ্রামের সৌদি আবরপ্রবাসী বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবিরের বাড়িতে গিয়ে চারটি অটোরিকশা ও কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে আসেন গোলাম আকবরের অনুসারী আরাফাত মামুনের নেতৃত্বে তাঁর বাহিনী। পরে ওই প্রবাসীর পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। তাঁকে পার্শ্ববর্তী গ্রাম গরীব উল্লাহপাড়ায় নিয়ে একটি বাড়ির কক্ষে আটকে মারধর করা হয়। এ খবর জেনে অপহৃত হুমায়ুনকে উদ্ধার করতে গ্রামবাসী ও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা গরীব উল্লাহপাড়ায় আসেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। ভাঙচুর করা হয় মামুনের কার্যালয়। পরে আটক হুমায়ুনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রবাসী হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সৌদি আরবের মদিনা বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক। এক মাস আগে দেশে আসেন। তিনি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হয়ে রাজনীতি করেন বলে তাঁকে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী আরাফাত মামুন অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। পরে তাঁর কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ নেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে ছাড় পেলে তিনি থানায় গিয়ে মামলা করবেন।

জানতে চাইলে আরাফাত মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ১৫টি অটোরিকশা, ৪টি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর দেড় শ কর্মী তাঁকে বিকেলে অস্ত্র নিয়ে খুঁজতে আসেন। তিনি পালিয়ে গেলে তাঁর কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। এলোপাতাড়ি গুলিতে তাঁর চার কর্মী আহত হয়েছেন।

সৌদিপ্রবাসীকে অপহরণের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, জমির কাগজ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ওই ব্যক্তির আত্মীয়রা তাঁকে ডেকে এনেছেন। ওই ঘটনায় তিনি জড়িত নন। তাঁকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে অপহরণের ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম শফিকুল আলম চৌধুরী রাতে প্রথম আলোকে বলেন, প্রবাসীকে অপহরণের ঘটনার বিষয়ে তিনি অভিযোগ পেয়ে পুলিশ পাঠিয়েছেন। গোলাগুলি, হামলা ও সংঘর্ষের কথা লোকমুখে শুনলেও কেউ সঠিক তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেননি। মামলা দিলে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।