নরসিংদীতে ১৫০ বাস ভাড়া আওয়ামী লীগের, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যাবেন নিজ উদ্যোগে

যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ঢাকায় যেতে ১৫০টি বাস ভাড়া করলেও গ্রেপ্তার ও হয়রানি এড়াতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় যাচ্ছেন যে যার মতো
ফাইল ছবি

নরসিংদী থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ও আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের সমাবেশে অংশ নিতে দুই দলের নেতা-কর্মীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ঢাকায় যেতে ১৫০টি বাস ভাড়া করেছেন। তবে গ্রেপ্তার ও হয়রানি এড়াতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় যাচ্ছেন যে যার মতো। ইতিমধ্যে ব্যক্তি উদ্যোগে বাস ও ট্রেনে করে অধিকাংশ নেতা–কর্মী ঢাকায় চলে গেছেন।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ কেন্দ্র করে নরসিংদীর ছয় উপজেলায় এক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। বিভিন্ন কোম্পানি ও পরিবহনের মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে ইতিমধ্যে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেন বলেন, সব উপজেলা মিলিয়ে অন্তত ১০ হাজার নেতা–কর্মী ঢাকায় সমাবেশে অংশ নেবেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। এ পর্যন্ত সব উপজেলা মিলিয়ে প্রায় ১৫০টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা সরাসরি সমাবেশস্থলে চলে যাবেন। এসব বাসে অন্তত সাড়ে সাত হাজার নেতা-কর্মী ঢাকায় যাবেন। এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে আরও দুই-তিন হাজার নেতা-কর্মী যাবেন। তিনি নিজে তাঁদের সবাইকে সমন্বয় করবেন।

অন্যদিকে জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, নরসিংদী থেকে ১০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। প্রস্তুতি সভার পরপরই এই বার্তা জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অর্ধেকের বেশি নেতা–কর্মী ঢাকায় চলে গেছেন। তাঁরা তাঁদের আত্মীয়স্বজনের বাসায় থেকে মহাসমাবেশস্থলে যোগ দেবেন। অন্যরা আজ ও আগামীকাল সকালের মধ্যে বিভিন্ন গণপরিবহন বা ভেঙে ভেঙে ঢাকায় পৌঁছাবেন। দল থেকে নেতা-কর্মীদের শক্ত বার্তা দেওয়া হয়েছে, কেউ যাতে বাড়িতে না থাকেন। সবাই যেন ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দেন।

সমাবেশে নেতা-কর্মীদের যাওয়া আটকাতে পুলিশ নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন। তিনি বলেন, মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে প্রতিটি উপজেলায় তাঁদের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে পুলিশ গেছে। সমাবেশে গেলে পরবর্তী সময়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ার দিয়েছে। গত কয়েক দিনে গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। তাই গ্রেপ্তার ও হয়রানি এড়াতে বাস ভাড়া করে তাঁরা মহাসমাবেশে যাচ্ছেন না। ব্যক্তিগতভাবে ভেঙে ভেঙে নেতা-কর্মীরা মহাসমাবেশে অংশ নেবেন।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনির্বাণ চৌধুরী বলেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব কর্মসূচি পালনের অধিকার আছে। তবে রাজনীতি করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অন্যথায় পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তাচৌকি বসানো হতে পারে।