অষ্টম শ্রেণি পাস ‘চিকিৎসক’ করতেন অস্ত্রোপচার, যেতে হলো শ্রীঘরে, বন্ধ ক্লিনিক
মনিরুল ইসলাম ওরফে স্বপনের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাস। বছরখানেক আগে অনুমোদন ছাড়াই নওগাঁর সাপাহার উপজেলা সদরে সততা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম নামের একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান খোলেন তিনি। সেখানে মনিরুল নিজেই অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অস্ত্রোপচার করতেন। এ ঘটনাটি নজরে আসার পর ক্লিনিকটি বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সনদ ছাড়া অস্ত্রোপচার করায় ক্লিনিকের পরিচালক মনিরুলকে দেওয়া হয়েছে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।
আজ শুক্রবার সকালে নওগাঁর সাপাহার উপজেলা সদরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্যাহ আল মামুন। এ সময় সেখানে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রুহুল আমীন এবং সাপাহার থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও আবদুল্যাহ আল মামুন বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় একজন সাংবাদিক নওগাঁর জেলা প্রশাসককে (ডিসি) ভুয়া চিকিৎসক মনিরুল ইসলামের অস্ত্রোপচারের একটি ছবি পাঠান। বিষয়টি আমলে নিয়ে জেলা প্রশাসক তাঁকে খোঁজ নিতে বলেন। এরপর আজ সকালে ওই ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। তিনি বলেন, অভিযানে গিয়ে জানা যায়, ক্লিনিকটি অনুমোদন ছাড়াই চলছিল। বিধি অনুযায়ী ক্লিনিকে একজন সার্বক্ষণিক চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও সেখানে গিয়ে পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদে মনিরুল অস্ত্রোপচার অভিযোগের বিষয়টি আদালতের কাছে স্বীকার করলে তাঁকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও সাত দিনের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। ক্লিনিকের অনুমোদন না থাকা, প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স না থাকাসহ চিকিৎসার উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইউএনও।
সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রুহুল আমীন বলেন, মনিরুলের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাস। তাঁর ডাক্তারি কোনো সনদ নেই। এরপরও তিনি ক্লিনিক খুলে অস্ত্রোপচার করতেন। এটা খুবই ভয়ানক একটি বিষয়। কোনো প্রকার চিকিৎসা পরিবেশ নিশ্চিত ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্লিনিক পরিচালনা করে আসছিলেন। শুধু সাপাহারে নয়, দেশের যেকোনো জায়গায় এ রকম অবৈধ ক্লিনিক গড়ে ওঠা উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।