জামালপুর জেলা কারাগারে বন্দীদের বিক্ষোভ, আগুন, আহত ৩ কারারক্ষী হাসপাতালে

জামালপুর জেলা কারাগারে বন্দীদের বিক্ষোভের পর ভেতর থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলেছবি: প্রথম আলো

জামালপুর জেলা কারাগারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বন্দীরা সেখানে বিক্ষোভ শুরু করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় কারাগারের বাইরে থেকে গুলির শব্দ শোনা গেছে। কারাগারের ভেতরে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। এ ঘটনায় আহত তিন কারারক্ষীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ছয়টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কারাগারে উত্তেজনা চলছিল।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে উত্তেজনার ঘটনায় তিনজন কারারক্ষী আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁরা হলেন মো. জাহিদুল ইসলাম (৪১), সাদেক আলী (৪৫) ও মো. রুকনুজ্জামান। তাঁদের মধ্যে মো. রুকনুজ্জামানকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা দুইটার দিকে হঠাৎ কারাগার এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দ শুনতে পান। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারাগারের আশপাশ থেকে লোকজনকে সরিয়ে দেন। এরপর থেকে কারাগার এলাকা থেকে কিছুক্ষণ পরপর গুলির শব্দ আসছিল। এ ঘটনায় ফৌজদারি এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের লোকজন দ্রুত ওই এলাকা থেকে সরে যান।

জামালপুর জেলা কারাগারে ৬৭০ জন বন্দী রয়েছেন বলে কারাগার সূত্রে জানা গেছে।
বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, কারাগারের আশপাশে কোনো লোকজন নেই। কারাগারের চারপাশে সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। বিকেলের দিকে একটি ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও ঢুকতে দেখা গেছে। কারাগার থেকে বন্দীদের উত্তেজনার শব্দও শোনা যাচ্ছিল। এ ছাড়া কারাগার থেকে ধোঁয়াও বের হচ্ছিল।

আরও পড়ুন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কারারক্ষী জানান, দুপুরে কারাগারে বন্দীরা বিদ্রোহ শুরু করেন। এ সময় কারাগারের এক কর্মকর্তাকে জিম্মি করার চেষ্টাও করেন। এরপর থেকে কারাগারের ভেতরে বন্দীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে বন্দীরা আগুন জ্বালিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ভেতরে এখনো উত্তেজনা রয়েছে। ভেতরে এখন কী অবস্থা, সেটি বোঝা যাচ্ছে না।

জামালপুর জেলা কারাগারের জেলার আবু ফাতাহ বলেন, ‘দুপুরের দিকে বন্দীরা খওয়াদাওয়া করেন। এরপর আমি কারাগারের ভেতরে পরিদর্শনে ঢুকি। এ সময় হঠাৎ কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই বন্দীরা আমাকে মারধর করতে শুরু করেন। এ সময় কয়েকজন কারারক্ষী আমাকে সেখানে থেকে কোনো রকমে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে কারাগারে বন্দীরা উত্তেজনা শুরু করেন।’

আরও পড়ুন