চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে (আলমডাঙ্গা-সদর একাংশ) নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ওরফে ছেলুন আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কারণ দর্শানোর নোটিশের (শোকজ) জবাব দিয়েছেন। সোলায়মানের পক্ষে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রোববার অনুসন্ধান কমিটির কাছে এ লিখিত জবাব পৌঁছে দেন।
জবাবে সোলায়মান লেখেন, দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হওয়া বিরোধী পক্ষ তাঁকে বিপদে ফেলার উদ্দেশ্যে ছদ্মবেশে তাঁর ব্যানারে এসব বেআইনি কার্যকলাপ করেছে। এসব ঘটনার জন্য তিনি দায়ী নন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-প্রথম মো. সাজ্জাদুর রহমান চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গঠন করা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান। গত ৩০ নভেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার দিন আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। নোটিশে আজ রোববারের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।
সোলায়মানের পক্ষে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) মো. বেলাল হোসেন, সরকারি কৌঁসুলি আশরাফুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি মহ. শামশুজ্জোহা ও সাধারণ সম্পাদক তালিম হোসেন এবং সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) আকসিজুল ইসলাম।
নোটিশের জবাবে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার লিখিতভাবে জানিয়েছেন, সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি ৩০ নভেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা (২০০৮) মেনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে তিনি আচরণবিধিপরিপন্থী কোনো কাজ তথা গাড়িবহর নিয়ে মিছিল বা মহড়া করেননি।
জবাবে তিনি লেখেন, তিনি শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। এ অবস্থায় তাঁর পক্ষে থাকায় মিছিল, মহড়া বা নির্বাচনী প্রচারণামূলক কোনো কার্যকলাপ করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া তিনি আচরণবিধি ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা থাকায় যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে ও আচরণবিধি মেনেই মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তবে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হওয়া বিরোধী পক্ষ তাঁকে বিপদে ফেলার উদ্দেশ্যে ছদ্মবেশে তাঁর ব্যানারে কোনো বেআইনি কার্যকলাপ করে থাকলে এর দায়ভার তাঁর নয়।
সোলায়মান আরও লেখেন, ‘আমি বিগত ৬০ বছর ধরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর আগে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়াসহ জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করেছি। ইতিপূর্বে কোনো নির্বাচনেই আমি আচরণবিধিপরিপন্থী কোনো কার্যক্রম করিনি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে নির্বাচনী আচরণবিধিসমূহ কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য আমি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মোতাওয়াক্কিল রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে মোট ২০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তাঁরা সোলায়মান হকের জবাব পেয়েছেন। এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।