‘আমার তিনটা মানিক আকাশে উড়াল দিল, ওগো আর খুঁইজা পামু না’
‘আমার তিনটা মানিক আকাশে উড়াল দিল, ওগো আর খুঁইজা পামু না। বাড়ির পাশের তিনটা কবর কেমনে দেইখা রাখমু।’ কথাগুলো বলছিলেন ঝালকাঠি রাজাপুর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুরের বলাইবাড়ি গ্রামের কৃষক মো. নুরুল ইসলাম। ঝালকাঠিতে বাস দুর্ঘটনায় তাঁর দুই ছেলে মেয়ে ও নাতিসহ তিনজন নিহত হয়েছেন।
নিহত তিনজন হলেন আইরিন বেগম (২২), তাঁর ১৮ মাসের মেয়ে রিপা মনি ও ভাই নয়ন হাওলাদার (১৬)। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তাদের লাশ বাড়িতে এনে দাফন করা হয়েছে।
আজ রোববার সকালে নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে ক্ষণে ক্ষণে মাতম চলছে। বাড়ির সঙ্গেই তিনজনের কবর দেওয়া হয়েছে। বাবার বাড়িতে বেড়ানো শেষে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার পথে আইরিন দুর্ঘটনায় নিহত হন। লাশ হয়ে আবার বাবার বাড়িতে ফিরে এসেছেন।
আইরিনের বড় ভাই সুমন হাওলাদার (৩৫) বলেন, ১ জুলাই আইরিন বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। বেড়ানো শেষে মেয়ে ও ছোট ভাইকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলার চরমোমেনিয়া গ্রামে দিকে যাচ্ছিলেন। পথে দুর্ঘটনায় মারা যান তাঁরা তিনজন। পেশায় একজন দূরপাল্লার পরিবহনের চালক সুমনের ধারণা, দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি অনেক পুরোনো হাওয়ায় এর ফিটনেস ভালো ছিল না। চালক দ্রুতগতিতে চালানোর কারণে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি।
আইরিনের স্বামী রিপন বেপারী বলেন, ‘আমি আমার দুইটা কলিজাকে হারাইলাম। ওরা আমার সংসারে আলো ছিল।’
গতকাল সকালে ঝালকাঠিতে যাত্রীবাহী বাস ‘বাশার স্মৃতি’ ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ-সংলগ্ন পুকুরে পড়ে যায় বাসটি। এতে ১৭ জন নিহত ও ৩৪ জন আহত হন।